Feature : পৃথিবীর বুকে ‘শয়তানের সাগর’, যেখান থেকে ফিরে আসেনি কেউ
![]() |
Feature : পৃথিবীর বুকে ‘শয়তানের সাগর’, যেখান থেকে ফিরে আসেনি কেউ |
পৃথিবীর বুকে ‘শয়তানের সাগর’, যেখান থেকে ফিরে আসেনি কেউ
বিশেষ প্রতিবেদক: এই বিরাট পৃথিবীর কতটুকই বা আমরা জানি! বেশিরভাগই অজানা। এই পৃথিবীতে ছড়িয়ে রয়েছে নানা রহস্য। এমন অনেক রহস্য রয়েছে, এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যার যুক্তি দিয়ে কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না।
জানেন কি, পৃথিবীর বুকেই আছে ‘শয়তানের সাগর’, যেখান থেকে ফিরে আসেনি কেউই। এই শয়তানের সাগরকে ‘ডেভিলস সি’ হিসেবেই অনেকে চেনে। এই শয়তানের সাগরকে কেন্দ্র করে চিনে পৌরণিক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। তাঁরা মনে করেন ওই সাগরের জলের নীচে বাস করে ড্রাগন। তারাই জাহাজকে গিলে খেয়ে নেয়। খ্রিস্টপূর্ব হাজার বছর থেকেই এই বিশ্বাস চলে আসছে।
প্রাচীনকাল থেকেই ওই শয়তানের সাগরে ঘটত অলৌকিক ঘটনা। প্রচলিত রয়েছে যে, ওই সাগরে জাহাজে করে এক রহস্যময় নারীকে প্রদক্ষিণ করতে দেখা যায়। চেঙ্গিস খানের নাতি কুবলাই খান ১২৭৪ ও ১২৮১ সালে জাপানে আক্রমণ করেন। কিন্তু দুবারই তিনি ব্যর্থ হন।
শয়তানের সাগর এলাকায় মারাত্মক টাইফুনের কবলে পড়ে তার বাহিনী। কুবলাই খানের বেশ কয়েকটি জাহাজ এবং প্রায় ৪০ হাজার সৈন্য শয়তানের সাগরে হারিয়ে যায়। ১৯৪০ ও ১৯৫০-এক দশকে মৎস্যজীবীদের বহু নৌকা ও একাধিক জাহাজ নিখোঁজ হয়ে যায়।
এবার জেনে নেয়া যাক কোথায় রয়েছে সেই শয়তানের সাগর? এই সাগরের অবস্থান মিয়া কিও আয়োজিমা দ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চলে। ১৯৫২ সালে একটি জাহাজ নিখোঁজ হওয়ার পর ‘কায়ু মারো ৫’ নামে একটি জাহাজ পাঠানো হয়েছিল। সেটিও ৩১ জন নাবিকসহ মিলিয়ে যায়। নাবিকদের কারও খোঁজ মেলেনি। এরপর জাপান সরকার সমুদ্র যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের জন্য অঞ্চলটি বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর গবেষকরা সাগরের এই এলাকাটি নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন, অঞ্চলটি ভাইস ভর্টিসেসের অন্তর্গত। এই অঞ্চলে উষ্ণ ও শীতল সামুদ্রিক জলের প্রবাহের কারণে এমন সমস্যা দেখা দেয়।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এখানে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ডিস্টারবেন্সের জন্য জাহাজগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। এ নিয়ে একাংশের অনুমান, জলের নীচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জাহাজগুলো তলিয়ে যায় ওই জায়গায়। অতীতে এই আগ্নেয়গিরিকেই হয়তো ড্রাগন ভাবত চিনারা। এর ফলে ছোটো ছোটো দ্বীপগুলোও হারিয়ে যেত। সৃষ্টি হত নতুন নতুন দ্বীপ।
পৃথিবীর ১২টি স্থানে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড অত্যন্ত প্রখর। সেই স্থানগুলিকে বলা হয় ভাইস ভর্টিসেস। এই শয়তানের সাগর ভাইস ভর্টিসেসের একটি। এই স্থানটি ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভুজ বা ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল নামেও পরিচিত। এই শয়তানের সাগর কতটা গভীর, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যায় নি।