Surongo : ‘সুড়ঙ্গ’র পাইরেসি নিয়ে জাজ’র সঙ্গে মামুনের দ্বন্দ্ব

Surongo : ‘সুড়ঙ্গ’র পাইরেসি নিয়ে জাজ’র সঙ্গে মামুনের দ্বন্দ্ব
Surongo : ‘সুড়ঙ্গ’র পাইরেসি নিয়ে জাজ’র সঙ্গে মামুনের দ্বন্দ্ব


‘সুড়ঙ্গ’র পাইরেসি নিয়ে জাজ’র সঙ্গে মামুনের দ্বন্দ্ব


ঢালিউড প্রতিবেদক: গত কোরবানির ঈদে মুক্তি পেয়েছে রায়হান রাফির চলচ্চিত্র ‘সুড়ঙ্গ’। সিনেমাটির পরিবেশনার দায়িত্বে ছিলো নির্মাতা অনন্য মামুনের পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য কনটেন্ট স্পেশালিস্ট’। ব্যপক আলোচনায় থাকা এ সিনেমাটি ইতোমধ্যে পাইরেসির কবলে পড়েছে। এতে সিনেমাটি প্রযোজক অন্তত ১ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেছে চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া। সিনেমাটি পাইরেসির কবলে পড়ায় এর পরিবেশক প্রতিষ্ঠানকেই দায়ী করেছে জাজ। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, তাদের মাধ্যমে পরিবেশন করা হয়নি বলেই সিনেমাটি পাইরেসির শিকার হয়েছে।

জাজ মাল্টিমিডিয়া তাদের ফেইসবুক পেইজে এক পোস্টে লিখেছে, ‘সুড়ঙ্গ’ পাইরেসি হয়েছে, কারণ সুড়ঙ্গ জাজের সার্ভারে রিলিজ হয় নাই। অন্য নতুন এক কোম্পানির সার্ভারে রিলিজ হয়েছে। জাজের সার্ভার থেকে কেউ কপি করেতে পারে না। জাজের সার্ভারে একবার এনক্রিপ্টেড হয়ে গেলে জাজের পক্ষেও কপি করা সম্ভব না। যদি কেউ কপি করতে পারে, তাহলে তাকে ১ কোটি টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা আমরা আরও ৭ বছর আগেই দিয়ে রেখেছি। আর হল থেকে ভিডিও রেকর্ডিং হলে, সেই হলের নাম চলে আসবে। তাই জাজের সার্ভারে চলা কোন সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ পাইরেসি করতে দেবে না। অর্থাৎ জাজ পাইরেসি ব্লক করেছে, টেকনোলজি দিয়ে। চোরের বা পাইরেসির পিছনে দৌড়ে নয়।’

পোস্টে আরো লেখা হয়েছে, ‘সুড়ঙ্গ’ এখনো সব প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয় নাই, বলতে গেলে বেশিরভাগ প্রেক্ষাগৃহেই এখনও মুক্তি বাকি। যেহেতু পাইরেসি হয়ে গেছে, এখন আর বুকিং থেকে তেমন একটা টাকা আসবে না। এতে সুড়ঙ্গ সিনেমার প্রযোজক অনেকখানি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আমাদের ধারণা, অন্তত ১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হবে। গত ৫ বছরে হল থেকে কোনো সিনেমা পাইরেসি হয়নি। সুড়ঙ্গ অল্প কয়টা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে, অন্যদিকে প্রিয়তমা ১০০ এর অধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ‘প্রিয়তমা’ পাইরেসি হয় নাই। ‘সুড়ঙ্গ’ কেন পাইরেসির শিকার হল?’

জাজের এমন অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার পরিবেশক অনন্য মামুন এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘বাজারে নতুন কোনো কোম্পানিকে প্রতিযোগিতায় টিকতে না দিতেই জাজ মাল্টিমিডিয়া এসব কথা বলছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে এমন কোনো টেকনোলজি আবিষ্কৃত হয়নি যেটা দিয়ে আপনি হল থেকে প্রিন্ট করা পাইরেসি বন্ধ করতে পারবেন। যদি তাই হত, তাহলে পৃথিবীর বিখ্যাত বড় বড় ছবিগুলো রিলিজের তিন ঘণ্টার মধ্যে পাইরেসি হত না। সাধারণত বাংলাদেশের সিনেমা ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করার পরে জাজ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমেই প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শিত হয়। এখন প্রশ্ন হল, জাজ থেকে রিলিজ হওয়া ছবি পাইরেসি হয় না?’

পাইরেসির উদাহারণ টেনে মামুন বলেন, ‘শাকিব খানের ‘বিদ্রোহ’ ছবি রিলিজের সাত দিনের মাথায় পাইরেসি হয়েছিল। ‘পাসওয়ার্ড’ ছবি রিলিজের চার দিনের মাথায় পাইরেসি হয়েছিল। যেটা নিয়ে প্রযোজক মামলা পর্যন্ত করেছিলেন। ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ জাজের সার্ভার থেকেই পাইরেসি হয়েছে। সুড়ঙ্গ পাইরেসি হওয়া নিয়ে কেন জাজ মাল্টিমিডিয়া অন্য ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে দোষারোপ করছে? কারণ একটাই, মার্কেটে নতুন কোনো কোম্পানিকে কম্পিটিশনে টিকতে না দেওয়া।’

তিনি আরো বলেন, জাজ মাল্টিমিডিয়া ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটি ভুল ব্যাখ্যা’ জাতির সামনে তুলে ধরেছে। প্রতি সপ্তাহে ৮ হাজার টাকা করে যাদের মেশিন ভাড়া ছিল। যখন প্রযোজক ইকবাল ও শাকিব খান মিলে নতুন একটি সার্ভার কোম্পানি করলেন, তারা ভাড়া নির্ধারণ করলেন চার হাজার টাকা। এতে লাভবান হল প্রযোজক। জাজ মাল্টিমিডিয়ার সেটা সহ্য হল না, তারা এসকে সার্ভার সিস্টেমকে কীভাবে মার্কেট থেকে আউট করা যায় সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন। এবার আমরা যখন নতুন করে প্রযোজক এবং হল মালিকদেরকে আন্তর্জাতিক কোয়ালিটির সার্ভারের মাধ্যমে প্রজেকশন সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি, তখনই এই মিথ্যা অপপ্রচার। এর মধ্য দিয়ে জাজ প্রকারান্তরে পাইরেসির হোতাদের ‘সহযোগিতা’ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনন্য মামুন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ গড়ে তোলেন ‘জাজ মাল্টিমিডিয়া’। সে সময় দেশের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্ভার স্থাপন করে তারা। পরে ২০১৯ সালে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এস কে ফিল্মস এবং প্রযোজক ইকবাল সিনেমা হলে আলাদা সার্ভার বসাতে চাইলে জাজের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্ব’ বাঁধে।

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url