Merve Dizdar : কে এই মারভে ডিজদার?
Merve Dizdar : কে এই মারভে ডিজদার? |
অভিনেত্রী হতে গিয়ে গৃহপরিচারিকার কাজও করতে হয়েছে মারভে ডিজদারকে
টার্কিশ প্রতিনিধি: ১৯৮৬ সালে তুরস্কের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মারভে ডিজদার। তার স্কুলের বন্ধুরা কেউ ডাক্তার আবার কেউ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন। ডিজদারের পরিবারও চাইতো সে ডাক্তার অথবা আইনজীবী হোক। এতে সেসময় তার কোন আপত্তিও ছিলো না। পরিবারের ইচ্ছাকেই নিজের ধ্যান-জ্ঞান করে এগোতে থাকেন। কিন্তু একটু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চিন্তারও পরিবর্তন হয়। তিনি আর চিকিৎসক বা আইনজীবী হতে চান না। তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন অভিনেত্রী হওয়ার। কিন্তু পরিবার তা মেনে নেননা। কিন্তু ডিজদার তার স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে বড় হতে থাকেন।
উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিনয়ের ওপর পড়াশোনা শুরু করেন ডিজদার। কিন্তু এক সময় বুঝতে পারেন, অভিনয় পেশাকে যতটা সহজ ভেবেছিলেন তার চেয়ে বহুগুণ কঠিন ও পরিশ্রমের। এরপর অভিনয় নিয়ে আরও বেশি পরিশ্রম করতে শুরু করেন। অভিনয় শিখতে যুক্ত হন মঞ্চে। একপর্যায়ে বাবা-মায়ের সম্মতি পেলেও, তাকে আর্থিক জোগান দিতে পারছিলেন না তার পরিবার। পরবর্তীতে তিনিও বুঝতে থাকেন, পরিবার ভাবছে সবকিছুর একটা মাত্রা থাকা দরকার। যে কারণে তাকে নিজের আয় করে চলতে হয়েছে।
জীবন চালাতে তাকে এক সময় বাসা বাড়ি জাড়ু দেয়া, মোছার কাজও করতে হয়েছে। গৃহপরিচারিকার কাজের সঙ্গে করেছেন সেক্রেটারির কাজও। কিন্তু তার লক্ষ্য সব সময়ই ছিল অভিনয়ে দক্ষতা বাড়ানো। এরপর একসময় ‘ডে ড্রিমিং’ নামের একটি টিভি সিরিজে ডাক পান। ৫১ পর্বের এই ধারাবহিকে সালিহা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এর মাধ্যমে পর্দায় অভিষেক হয় তার। ধারাবাহিকটি জনপ্রিয় হলেও সাফল্য আসেনি ডিজদারের। এরপর বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে নাম লেখান সিনেমায়। ‘আ নয়েজ ইন দ্য নাইট’ নামের সেই সিনেমাটিও ব্যর্থ হয়।
ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায় পড়েছিলেন ডিজদার। পরে টিভিতে ‘দ্য নাইনটিন্থ’, ‘ফাইভ ব্রাদার্স’, ‘সেভেন ফেইস’-এর মতো কাজ দিয়ে পরিচিতি পেতে শুরু করেন। ২০১৭ সালে ‘অরগানিক লাভ স্টোরি’ সিনেমা দিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে প্রশংসিত হন। সর্বশেষ ২০২২ সালে ‘স্নো অ্যান্ড দ্য বেয়ার’ সিনেমা দিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া জাগালেন।
৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি জিতে নিয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। তুরস্কের প্রথম কোনো অভিনেত্রী এই পুরস্কার পেলেন। এবারের আসরে বিজয়ীদের তালিকায় নিজের নাম শুনে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তিনি। তাই পুরস্কার হাতে নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পরেন মারভে ডিজদার। নুরি বিলগে জিলানের ‘অ্যাবাউট ড্রাই গ্রাসেস’ সিনেমার জন্য এই পুরষ্কার পান তিনি।
কানে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটি সংগ্রামী নারীদের উৎসর্গ করে ডিজদার বলেন, ‘আমার যে বোনেরা সংগ্রাম করে শক্তি জোগান, যারা জীবনে ঝুঁকি নেন, জীবন চলার পথে কঠিন বাধা আসলেও হাল ছেড়ে দেন না, যারা সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে যান শুধু ভালো দিনের জন্য; তুরস্কের আমার সেই সব বোনদের এটা পাওয়া।’
হাঙ্গামা/আল-আবিদ