Music Video : আবারো অশ্লীলতা মিউজিক ভিডিওতে
আবারো অশ্লীলতা মিউজিক ভিডিওতে |
আবারো অশ্লীলতা মিউজিক ভিডিওতে
একটা সময় গান ছিলো শুধু শোনার মাধ্যম। আর এখন তা শোনার পাশাপাশি দেখার মাধ্যমে পরিনত হয়েছে। আর এ সুযোগ করে দিয়েছে ইউটিউবসহ বেশ কিছু ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম। শোনার থেকে গান দেখাটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে বর্তমান প্রজন্মের কাছে। এই সুযোগটা ব্যবহার করে অতি সহজেই লাখো মানুষের কাছে পৌছে যাচ্ছেন শিল্পীরা। এই প্রতিযোগীতার বাজারে সস্তায় বেশি পরিচিতি পেতে অনেকেই মিউজিক ভিডিওতে আশ্রয় নিচ্ছেন অশ্লীলতার।
মূলত নতুন ও অখ্যাত শিল্পীরা গানের কথা ও ভিডিওতে প্রদর্শন করছেন অশালিন অঙ্গভঙ্গি। তাদের পাশাপাশি এই লাইনে গানের কাটতি বাড়াতে সামিল হচ্ছেন শীর্ষস্থানীয় শিল্পীরাও। এমন সস্তা গান ও ভিডিও সুযোগে এখন অভাব নেই ভুঁঁইফোঁড় চিত্র নির্মাতারও। এদের অনেকেই সাধারণ একটা ক্যামেরা ভাড়া নিয়ে ছোট্ট একটা কামড়ার ভেতরেই নির্মাণ করছেন মিউজিক ভিডিওসহ নানা ধরনের কন্টেন্ট।
জানা গেছে, মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকার ভেতরেই নির্মাণ হচ্ছে এসব সস্তা কন্টেন্ট। এমনকি অনেক কথিত নির্মাতা মিউজিক ভিডিওর নাম করে চালাচ্ছে অনৈতিক ব্যবসা। শোনা যায়, নায়িকা বানানো কথা বলে উঠতি নারী মডেলদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে করানো হয় দেহ ব্যবসা। তাদের এমন কর্মকান্ডে একের পর এক দুর্নামের সঙ্গীও হচ্ছে মূল ধারার শোবিজ। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বাংলা চলচ্চিত্র।
একটা সময় ছিলো যখন রাস্তা ঘাটে অনেককেই নিঃসঙ্কোচে গলা ছেড়ে গান গাইতো। সেই সহজ দৃশ্যটি এখন দূর্লব। কারণ সেই পথেঘাটে গলা ছেড়ে গান গাওয়ার মতোই সহজ হয়ে গেছে অনলাইন মিউজিক ভিডিও। সহজ সস্তা হলেও ক্ষতি ছিল না। কিন্তু যখন সেটা চরম অশ্লীলতায় সয়লাব, তখন সেটা দেশীয় সমাজ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের জন্যই ভয়াবহ। এভাবেই মিউজিক ভিডিও প্রযুক্তির আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ হয়ে উঠতে লাগল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সঙ্গীতজগতের অনেক পরিচিত মুখই একসময় অশ্লীল মিউজিক ভিডিওতে পারফর্ম করেছেন। তবে তারা তাদের সেই অন্ধকার দিকগুলো ভুলে যেতে চান। কিন্তু একবার যা ভিডিওতে চলে আসে সেটা কি আর মুছে ফেলা যায়! এই অশ্লীল মিউজিক ভিডিওতে অঙ্গভঙ্গি করা গায়িকাদের মধ্যে সর্বশেষ দেখা গেছে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ফাতেমা তুয যাহরা ঐশীকে। পেশায় চিকিৎসক এই গায়িকা সব ধরনের দর্শক-শ্রোতাকে তুষ্ট করতে ফোক থেকে শুরু করে প্রায় সব ধারার গানেই পারফর্ম করেন।
অশ্লীলতার রসদ যোগাতে আরো এক কাঠি এগিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের গানে পারর্ফম করানো হচ্ছে বিদেশী আইটেম গার্লদের। এমনকি সাবেক নীল ছবির তারকা সানি লিওনকেও দেখা গেছে বাংলাদেশের গানে পারর্ফম করতে। এছাড়া বলিউডের নারগিস ফাখরি, ‘কাটা লাগা’খ্যাত শেফালি জরিওয়ালাও অশ্লিল ভঙ্গিতে নেচেছেন বাংলাদেশের গানের মিউজিক ভিডিওতে।
এসব ভিডিওতে বিরক্ত রুচিশীল দর্শক শ্রোতারা। এ জন্য অনেকেই মিউজিক ভিডিওর ওপর সেন্সর বোর্ড গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘এই অশ্লীলতার জন্য আমি চ্যানেলগুলো ও বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থাকে দায়ী করব। তারা যদি ভালো ভালো ভিডিও তৈরি করে তাহলে এগুলো হয় না। এ বিষয়ে একটি নীতিমালা হওয়া জরুরি, যাতে যেনতেন মিউজিক ভিডিওর নামে কেউ অশ্লীলতাকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে না পারে।’’
হাঙ্গামা/অর্নব