Mostofa Sarwar Farooki : “ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ আর নাই”
“ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ আর নাই” |
“ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ আর নাই”
বাংলাদেশের প্রথিতযশা চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার সিনেমা মানেই ভিন্ন কিছু। সিনেমাপ্রেমীরা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন তার সিনেমার। কিন্তু বেশ কয়েক বছর হলো এই খ্যাতিমান নির্মাতার কোনো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছেনা প্রেক্ষাগৃহে। কারণ সেন্সর বোর্ড।
সিনেমাজীবনের শুরু থেকেই চলমান প্রথার বাইরে গিয়ে নির্দিষ্ট ছক ভেঙে গল্প বলে আসছেন ফারুকী। তার প্রতিটি সিনেমাই ছিলো শিক্ষনীয়, সাবলীল ও সচেতনতামূলক প্রতিবাদী। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে তার বেশিরভাগ সিনেমাই সেন্সর বোর্ডে আটকে ছিল দীর্ঘসময়।
সর্বশেষ ‘শনিবার বিকেল’ নামে ফারুকী নির্মিত একটি সিনেমা সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে দীর্ঘ তিন বছর যাবত। কেন আটকে আছে এই সিনেমা তা নির্মাতা নিজেও জানেন না। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী। তিনি রাষ্ট্রের এই স্বেচ্ছাচারিতাকে কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে।’
৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) দেয়া ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমার কত রাত গেছে অনিদ্রায়। কত দিন গেছে ক্ষমতাবানদের দুয়ারে হাত মুছতে মুছতে। কত দুপুর গেছে রাগে অন্ধ হয়ে। কত বছর গেছে নিজের চিৎকার নিজেই গিলে ফেলে। ধন্যবাদ, হে রাষ্ট্র! ফিল্মমেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে।”
রাষ্ট্রের ভঙ্গুর ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে ঠিকঠাক সাইজ করার জন্য। ব্যাচেলরের সময় তুমি ভাবছো আমার ছবি সমাজ নষ্ট করে ফেলবে! মেড ইন বাংলাদেশে ভাবছো এই ছবি দেশ ধ্বংস করবে! সুতরাং দেড় বছর সেন্সর জেলে রাখছো! ঠিকই আছে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলারের জন্য সেন্সরের জেলটা একটা বোধ হয় কম হয়ে গেছিলো। অপরাধ বিবেচনায় ঐ ছবি আটকে রাখা উচিত ছিলো তিন বছর। যাই হোক শনিবার বিকেলে সেটা পুষিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। উঠতে বসতে এইভাবে পিটিয়ে ছাল তোলার জন্য কৃতজ্ঞ।”
ফারুকী তার পোস্টে আরো বলেন, “কিন্তু এইভাবে বোধ হয় পুরোপুরি হবে না। কারন একটা ছবি ভাবা হয়ে গেলে তো সেটা দুনিয়াতে এগজিস্ট করে গেলো। বানানো হলে তো আরো শক্ত ভাবে এগজিস্ট করলো। আজ হোক কাল হোক সেটা তো দেখে ফেলবে মানুষ। তাই বলি কি এমন কিছু একটা করো যাতে ভাবনাটাও বন্ধ করে দেয়া যায়। এমন ওষুধ আবিষ্কার করো, হে রাষ্ট্র, যাতে কারো মনে ক্ষোভ জন্ম না নেয়! কারন সম্মিলিত ক্ষোভের চেয়ে বিধ্বংসী কোনো অস্ত্র নাই! আরো খেয়াল রাখতে হবে ক্রমাগত চাপে এই ক্ষোভ যেনো ঘৃণায় রুপ না নেয়। কারন কে না জানে ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারনাস্ত্র নাই।”
হাঙ্গামা/ধ্রুব