Jaya Ahsan : ‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে ক্ষেপেছেন জয়া!

‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে ক্ষেপেছেন জয়া!
‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে ক্ষেপেছেন জয়া!

‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে ক্ষেপেছেন জয়া!


সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’। এ সিনেমা মুক্তির পর জয় করে নিয়েছে দর্শকের হৃদয়। এ নিয়ে আলোচনা ও প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে।  ‘হাওয়া’র এমন জয়জয়কারকে রুখে দিতে চাচ্ছে একটি মহল। ইতোমধ্যে এই সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধের জন্য পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ। এমনকি এর নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। তাদের অভিযোগ, ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ভঙ্গ করেছেন এর নির্মাতা।

এ ঘটনায় স্তম্ভিত চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরাসহ গোটা দেশের সিনেমাপ্রেমীরা। তারা যে যার যার অবস্থান থেকে এতোদিন সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। এবার বিভিন্ন মাধ্যমের অভিনয় শিল্পী, নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট কলাকুশলিরা একতাবদ্ধ হয়ে এসেছেন প্রকাশ্যে। অভিনব পদ্ধতিতে কাটা তারে বন্দী হয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে করেছেন সাংবাদিক সম্মেলন। দাবি উঠেছে সেন্সর বোর্ড বাতিলের। গত ২৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান তারা।

এ প্রতিবাদি সাংবাদিক সম্মেলনে দেশের বরেণ্য নির্মাতা-অভিনেতা থেকে শুরু করে এ সময়ের গুণী শিল্পীরাও অংশ নিয়েছেন। তাদের সাথে উপস্থিত হয়েছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানও। ‘হাওয়া’ সিনেমার উপর এমন অযাচিত হস্তক্ষেপে ক্ষেপেছেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষুব্ধ স্বরে এই অভিনেত্রী বলেছেন, ‘‘কোনো শিল্পকলা আসলেই কি শর্ত মেনে চলতে পারে? কোনো চলচ্চিত্র কি শর্তসাপেক্ষে তৈরি হতে পারে? তাহলে চলচ্চিত্র কেন? শর্ত দিয়ে যদি বানাতে হয়, তাহলে চলচ্চিত্র নির্মাণের অর্থই হয় না।’’

গেরিলা’খ্যাত এই অভিনেত্রী জানান, প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিজেই অনেক কাজ করছেন। এসবের প্রতি রয়েছে তার বিশেষ আবেগ। এরপরও তিনি ‘হাওয়া’র বিষয়ে ওঠা অভিযোগকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সিনেমায় শালিক পাখির যে দৃশ্য দেখানো হয়েছে তা বৃহৎ স্বার্থে। এটা আমার কাছে স্বাভাবিকই লেগেছে। আমি মনে করি এটাকে সরলীকরণ করা একদম অনুচিত।

জয়া আহসান আরও বলেন, ‘‘সারাদেশে বন উজাড় হচ্ছে, দিনের পর দিন পশুপাখির সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় বনবিভাগ বা প্রশাসন কোথায়? চলচ্চিত্রের বেলায় প্রশাসনের সবসময় যে চাপ, সেটা বন্ধ করতে হবে। সব চরিত্র যদি নিয়ম মেপে চলতে থাকে তাহলে তো কোনো ফিকশনই তৈরি হবে না। আমরা কী তাহলে চলচ্চিত্র নির্মাণ করব না? আমরা কী তাহলে গল্প বলব না?’’

সাড়ে তিন বছর ধরে সেন্সর বোর্ডে নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রটি। এ প্রসঙ্গে জয়া বলেন,“এটা নিয়ে আমরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। হলি আর্টিজেনের ঘটনা তো আসলে ঘটেছে। সেগুলো নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। কিছুদিন আগে শাহিন আক্তার একটি উপন্যাস রচনা করলেন। এগুলো তো আমরা আটকে রাখতে পারব না। চলচ্চিত্রের সময় কি অসুবিধা?’’

উল্লেখ্য, ‘বাংলা চলচ্চিত্র বা কন্টটেন্টে সেন্সরশিপের খড়গ গল্প বলার স্বাধীনতা চাই’ শীর্ষক এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, মোরশেদুল ইসলাম, তারিক আনাম খান, গাউসুল আলম শাওন, শম্পা রেজা, আফসানা মিমি, নুরুল আলম আতিক, মাসুম রেজা, কামার আহমেদ সাইমন, অমিতাভ রেজা, পিপলু আর খান, মেজবাউর রহমান সুমন, চঞ্চল চৌধুরী, ইরেশ যাকের, আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারি মমসহ শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকে।

হাঙ্গামা/ধ্রুব
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url