Hawa : ‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা!

‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা!
‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা!

‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে মামলা!


বাংলাদেশের সিনেমা হলে যেন সাইক্লোন শুরু করেছে ‘হাওয়া’। মুক্তির তিন সপ্তাহ পেরোলেও সিনেপ্লেক্সগুলোতে প্রত্যেকটি শো এখনো হাউজফুল। এই সিনেমা দেখতে হলে দুদিন আগেই কাটতে হচ্ছে টিকেট। এমন ঘটনা বাংলা সিনেমার ইতিহাসে বিরল। ‘হাওয়া’র এমন জোয়ারের মাঝেই এলো দুঃসংবাদ। মামলা হলো সিনেমাটির বিরুদ্ধে। 

বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবেশবাদীরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন এই সিনেমার একটি দৃশ্য কর্তনের। কারণ সে দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, চান মাঝি চরিত্রে অভিনয় করা চঞ্চল চৌধুরী একটি শালিক পাখি খাঁচায় বন্দি করে পুষতেন। এক পর্যায়ে সেই শালিক পাখিকে মেরে পুড়িয়ে খেতে দেখা যায় তাকে। 

গত ২৯ জুলাই চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। মুক্তির পর পরই একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় চলচ্চিত্রটির পর্যালোচনা (রিভিউ)। সেই রিভিউতেও অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর শালিক হত্যা করে চিবিয়ে খাওয়ার বিষয়টি এসেছে। এরপর ‘হাওয়া’ সিনেমার বিরুদ্ধে অনেকেই বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। তারপর গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)। 

তাদের বিবৃতির পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখেন বন অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তারা জানিয়েছিলেন, ‘হাওয়া’ বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৭ আগষ্ট (বুধবার) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে ‘হাওয়া’র পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের নামে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর অসীম মল্লিক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। মামলায় বাদী হয়েছেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। সাক্ষী করা হয়েছে তদন্ত কমিটিতে কাজ করা অপর তিন সদস্য আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাসকে।

জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত পর্যালোচনায় লেখা হয়েছিলো, ‘‘সিনেমায় চাঁন মাঝি চরিত্রটি খাঁচায় বন্দি করে একটি শালক পুষতো। এক পর্যায়ে সেটিকে পুড়িয়ে উদরস্থ করতেও সময় লাগে না চানের। হলভর্তি দর্শক চোখমুখ কুঁচকে চঞ্চল চৌধুরীর চিবিয়ে চিবিয়ে পোষা পাখির হাড়-মাংস খাওয়া দেখেন। তীব্র রোমাঞ্চ আর ঘৃণা নিয়ে তাকান। দৃশ্যটি তাদের মাথায় গেঁথে যায় অনেক দিনের জন্য।’’

প্রসঙ্গত, এ সিনেমায় চঞ্চল চৌধুরী ছাড়াও আরোও অভিনয় করেছেন নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, রিজভী রিজু প্রমুখ।

হাঙ্গামা/ধ্রুব
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url