Apocalypto : মৃত্যুর আগে একবার হলেও দেখা উচিৎ
২০০৬ সালে বিশ্বব্যপি মুক্তি পায় মেল গিবসন পরিচালিত ইতিহাসভিত্তিক সিনেমা ‘অ্যাপোক্যালিপ্টো’। ৬০০ বছর আগের ঐতিহাসিক মায়ান অথবা মায়া সভ্যতার প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ সিনেমার গল্প। যেখানে মায়ান সভ্যতার আগ্রাসন থেকে নিজ সভ্যতা ও সংস্কৃতি রক্ষার আমৃত্যু সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তির গল্প বলা হয়েছে। দূর্দান্ত কাহিনী, চিত্রনাট্য, অভিনয়ের কারণে মুক্তির বছরেই আস্কারের জন্য মনোনিত হয় ‘অ্যাপোক্যালিপ্টো’। যা সিনেমার ইতিহাসে বিরল।প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী, অনাহার, অনাবৃষ্টির সাথে লড়াই করে টিকে থাকা এক দুঃসাধ্য গল্পের এই সিনেমা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা করেছেন জাকির হাসান ইকবাল। ‘সিনেমাবাজি’ নামের জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগ্রহ করে তার এই আলোচনা নিবন্ধটি হাঙ্গামা২৪-এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
মৃত্যুর আগে একবার হলেও দেখা উচিৎ || জাকির হাসান ইকবাল
❝যতক্ষণ না পর্যন্ত নিজে নিজেই ধ্বংস হচ্ছে,
ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো মহান সভ্যতাকেই জয় করা যায় না।❞
.......... উইলিয়াম জেমস ডিউরান্ট
একটি মহান সভ্যতা গড়ে ওঠে হাজার বছর ধরে, কিন্তু ধ্বংস হতে বেশি সময় নেয় না। সভ্যতা পতনের অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে বড় কারণগুলো অবশ্যই অন্তকলহ, গৃহযুদ্ধ ও বহিঃশক্তির আক্রমন। চলুন ঘুরে আসা যাক ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে। মেক্সিকোর মায়ান সভ্যতায়; যে সভ্যতার সূচনা হয়েছিলো খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে। যে সভ্যতা পতনের দাঁড়প্রান্তে দাঁড়িয়ে শেষ নিঃশ্বাস গুনছে। দুর্যোগ, মহামারী, অনাহার, অনাবৃষ্টির জন্য যখন টিকে থাকা দুঃসাধ্য ঠিক সেই সময়ের কথা...
♦ কাহিনী সংক্ষেপ ♦
মেক্সিকোর ঘন জঙ্গলে বসবাসকারী একটি মায়ান উপজাতি যাদের প্রধান পেশা হলো বন্যপ্রাণী শিকার। শত প্রতিকূলতা সত্বেও সুখে শান্তিতে যাদের দিন কাটছিলো। হঠাৎ একদিন তাদের বসবাসস্থলে হামলা চালায় আরেক মায়ান উপজাতি গোষ্ঠী। ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয় সেদিন। কিন্তু গল্পের নায়ক ‘জাগুয়ার পো’ কোনোমতে তার গর্ভবতী স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে একটি গভীর প্রাকৃতিক কূয়ায় লুকাতে সক্ষম হয় এবং কথা দিয়ে যায় সে ফিরে এসে তাদের উদ্ধার করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সে পরাজিত হয় এবং শত্রুরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর কি হয় তা জানার জন্যই দেখতে হবে অসাধারণ রোমাঞ্চকর এই মু্ভিটি...
♦ ভালোলাগার বিষয়বস্তু ♦
♠ মহান মায়া সভ্যতার উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে; পৃথিবীতে যে সভ্যতার অবদান অনেক। মায়ানদের ছিলো পূর্ণাঙ্গ লিখিত ভাষা, শিল্পকর্ম, নিজস্ব পিরামিড স্থাপত্য যা পৃথিবীর বিস্ময়। তাদের নিজস্ব ট্যাটু, সাংকেতিক চিহ্ন, রণকৌশল ও দিনপঞ্জিকা। সবকিছুরই এক আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে যা সুন্দরভাবে ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে এ সিনেমায়।
♠ মুভিটির সমস্ত কথোপকথন ‘মায়ান’ ভাষাতেই হয়েছে। এজন্য এ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য বেশিরভাগ শিল্পীকেই প্রাচীন মায়ান ভাষা শিখতে হয়েছে।
♠ উপমহাদেশের সঙ্গীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খানের যন্ত্রসঙ্গীত ও কন্ঠশিল্প দুটোই ছিলো সিনেমাতে।
♦ শেষের শুরু ♦
কোনো সভ্যতাকে সিনেমার রিলে ফুঁটিয়ে তোলা সহজ কাজ ছিলো না। সেই কাজটি অবলীলায় করে দেখিয়েছেন পরিচালক মেল গিবসন।
হাঙ্গামা/সানজানা