Hawa : হাওয়ায় বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়টাই বেশী ছিল

গত ২৯ জুলাই সারাদেশব্যপী মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতিক্ষিত চলচ্চিত্র 'হাওয়া'। আলোচিত নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ, নাজিফা তুষি, নাসির উদ্দীন খানসহ আরো অনেকেই। আলোচিত এই সিনেমাটি দেখে ব্যক্তিগত অভিমত জানিয়েছেন চলচ্চিত্র সমালোচক আসিফ নেওয়াজ। তার লেখা আলোচনা মূলক নিবন্ধটি হাঙ্গামা২৪ এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
হাওয়ায় বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়টাই বেশী ছিল || আসিফ নেওয়াজ
হাওয়ায় বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়টাই বেশী ছিল || আসিফ নেওয়াজ

হাওয়ায় বিলীন হয়ে যাওয়ার ভয়টাই বেশী ছিল || আসিফ নেওয়াজ


মানুষের এত এত উন্মাদনার মাঝেই 'হাওয়া' হাওয়ায় বিলীন হয়ে যায় নাকি সেই ভয়টাই বেশী পাচ্ছিলাম। ভয়টা আসলে উন্মাদনা নিয়ে না নিজের বিশ্বাসটা নিয়ে ছিলো।

কিছু গল্প আছে যা দেখলে মনের অন্তরালে দাগ কাটে। এ ছবির গল্পটাও তেমনই। ডিরেক্টর মেজবাউর রহমান সুমন খুব নৈপুন্যের সাথে প্রতিটা চরিত্রকে এত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা অবশ্যই প্রশংসনীয়। প্রতিটা চরিত্রই বোধ হয় নিজের ১০০% দিয়ে চেষ্টা করেছে। মুক্তির আগেই তুষি, তুষির সার্জারি, এবং তুষির অভিনয় নিয়ে অনেকের ভয় দেখেছি এবং সমালোচনা ও দেখেছি, তবে গুলতি চরিত্রে তুষিও তার সেরাটা দিয়েছেন এটা নিঃসন্দেহে স্বীকার করতে হবে। 

চঞ্চল চৌধুরী, নাসির উদ্দিন, সুমন আনোয়ার, শরীফুল রাজ, সোহেল মণ্ডল, রিজভী- প্রত্যেকে অভিনয়ের জায়গায় একেকজন মহারথী। এবারেও আমাদের তারা নিরাশ করেন নি, তাদের সেরাটা নিঙড়ে দিয়েছেন স্ক্রিনে। চঞ্চল আর নাসির উদ্দিনের কী অসাধারণ পারফর্মেন্স!! উফফ, মাথা থেকে সরাতেই পারছি না একেকটা এক্সপ্রেশন, সিচুয়েশন। কী দুর্দান্ত অভিনয়!! একদম খাপে খাপ আরকি! কোথাও আগ্রহ হারানোর জায়গা পেলাম না। ডায়ালগ গুলিও একেবারে টু দ্যা পয়েন্টে বসেছে।

কিছু কিছু শট এখনও মাথায় বসে আছে, কালার গ্রেডিং আর সিনেমাটোগ্রাফির আলাদা করে প্রশংসা করতে হবে।  প্রথম নোঙর ফেলার দৃশ্য থেকে শুরু করে একেকটা অদ্ভুত সুন্দর শট যুক্ত হইছে একের পর এক। এখানে পুরো টিমটা একটা স্যালুট পেতেই পারে। সমুদ্রকে এত সুন্দর ভাবে প্রদর্শন করেছে হাওয়া টিম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সিনেমাটোগ্রাফি অদ্ভুত সুন্দর। মিউজিক অসাধারণ। সবার দুর্দান্ত অভিনয়। ভিন্ন ধাচের গল্প। দুর্দান্ত মেকিং। সব মিলিয়ে "হাওয়া" এক্সপেকটেশন ফুলফিল করে গেছে চমৎকারভাবে। এই সিনেমা নিঃসন্দেহে এই হাইপ ডিজার্ভ করে। 

কেউ কেউ বলছে এটা টেলিফিল্ম, কেউ কেউ বলেছে বি লো এভারেজ, কেউ কেউ বলছে ওয়েস্ট অফ টাইম। অনেকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখলাম। আমি আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলছি, আমরা বাংগালী মানুষ ভাই। আমাদের নদী, সমুদ্র, পাহাড় আর জংগল এগুলো ছাড়া অহংকার করার কিছুই নেই। হাওয়া সিনেমা দেখিয়েছে আমাদের সমুদ্রের প্রতি মানুষের উন্মাদনা কতটুকু থাকতে পারে। সব কিছুর উর্ধ্বে ভালোলাগা আর চোখের শান্তি। সেটা হাওয়া খুব ভালোভাবেই পেরেছে।

আপাতত "হাওয়া"র ঘোরে ডুবে আছি। আপনারাও থাকুন। জীবনে একটু " হাওয়া" বদলের দরকার আছে, কি বলেন!!

হাঙ্গামা/আসিফ নেওয়াজ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url