যাদের কোনো দেশ নেই - (১ম পর্ব) : হঠাৎ জানলেন তিনি এ দেশের কেউ নন

স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা মানুষের জাতীয়তা থাকে। দেশ থাকে, দেশের পরিচয় থাকে। হয়তো এদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে অনেকের বাড়ি-ঘড় থাকেনা। থাকেনা মাথা গোজার একটু ঠাই। তবে তাদের দেশ থাকে। কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন কিছু মানুষ কিংবা জাতির কথা উঠে আসবে, তাদের সত্যি বলতে কোনো দেশ নেই। নেই জাতীয়তা। 

কোন দেশের নাগরিক, কোনটি তোমার দেশ? এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই অন্তত ৮ কোটি ২৪ লাখ মানুষের। বিভিন্ন রকমের সংকট আর দুর্দশায় ভরা দেশবিহীন এই মানুষগুলোর জীবন। এদেরমধ্যে রোহিঙ্গাদের মতো অনেক শরণার্থী রয়েছেন। যারা বিভিন্ন দেশে পরিচয়বিহীন ভাবে আটকে আছেন। এদের অনেককেই গ্রহণ করেনি জন্মভূমি কিংবা আবাসভূমি। এই দেশ পরিচয়হীন মানুষদের কাহিনী নিয়েই হাঙ্গামা২৪-এর ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘যাদের কোনো দেশ নেই’। আজ প্রকাশিত হলো এই প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব।
যাদের কোনো দেশ নেই - (১ম পর্ব) : হঠাৎ জানলেন তিনি এ দেশের কেউ নন
হঠাৎ জানলেন তিনি এ দেশের কেউ নন : জে সুং সেউং

হঠাৎ জানলেন তিনি এ দেশের কেউ নন


এই ব্যাক্তির নাম জে সুং সেউং। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন হংকংয়ে, কিন্তু তার নাগরিকত্ব ছিল বেলজিয়ামের। কারণ তার বাবা ছিলেন হংকংয়ের নাগরিক, আর মা ছিলেন বেলজিয়ামের নাগরিক। তার জন্মের সময় বাবা-মা দুজনেই হংকংয়ে ছিলেন। জন্মের দুই বছরের মাথায় তার বাবা-মা তাকে নিয়ে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে চলে আসেন।

বেলজিয়ামের আইন অনুযায়ী- বেলজিয়ামের বাইরে কেউ জন্ম নিলে ১৮ থেকে ২৮ বছরের বয়সসীমার ভেতরে এখানে থাকতে হবে। ২৮ বছরের নিচে হলে তাকে এ দেশে থাকার ইচ্ছা পোষণ করে নাগরিক হওয়ার আবেদন করতে হবে। কিন্তু জে সুং সেউং সেই শর্ত পূরণ করতে পারেননি। তাই ২৯ বছর বয়সে বেলজিয়ামের নাগরিকত্ব চান তিনি। আইন অনুযায়ী শর্ত পূরণ না হওয়ায় ব্যর্থ হন তিনি।

বেলজিয়ামের বাইরে জন্ম নেওয়ায় এমন বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে তাকে। যখন তিনি পাসপোর্ট নবায়ন করতে যান, তখন জানতে পারেন তিনি আর বেলজিয়ামের নাগরিক নন। তাকে ফিরে যেতে হবে হংকংয়ে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে সেউংয়ের। এতদিন বেলজিয়ামের পাসপোর্ট নিয়ে নানা দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। বেলজিয়ামে এত বছর থাকায়, এখানেই পরিবার-পরিজন, কাজ, পড়াশোনা সব তার। 

হুট করে নাগরিকত্ব নেই বললেই হলো? সেউং বেলজিয়ামে থাকায় হংকংয়ের নাগরিকত্ব কখনো চাননি। স্বাভাবিকভাবেই তিনি হংকংয়ের নাগরিকও নন। সব মিলিয়ে দেশহীন মানুষ হয়ে পড়েন তিনি। তাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয় বহু সংবাদ প্রচার হয়। তার পক্ষে মামলা চলে আদালতে। কিন্তু সব কিছুতেই ব্যর্থ হন তিনি। এরপর দেশহীন মানুষ হিসেবে শরনার্থী শিবিরে থাকার সুযোগ পান সেউং। 

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url