Movie Review : ‘মুখোশ’ সিনেমা থেকে দূরে থাকুন!

গত ০৪ মার্চ (শুক্রবার) সারাদেশব্যাপি একযোগে মুক্তি পেয়েছে বহুল আলোচিত সিনেমা ‘মুখোশ’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম ও চিত্রনায়িকা পরীমনি। এতে আরো রয়েছেন জিয়াউল রোশান, ইরেশ জাকের, আজাদ আবুল কালাম, প্রাণ রায়, ফারুক আহম্মেদ, রাশেদ মামুন অপু, তারেক স্বপন, এলিনা শাম্মি, অলংকার চৌধুরী প্রমুখ।

‘মুখোশ’ শিরোনামের সরকারি অনুদানের এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা ইফতেখার শুভ। মূলত নিজের লেখা উপন্যাস ‘পেজ নাম্বার ৪৪’ অবলম্বনেই এটি নির্মাণ করেছেন তিনি। জানা গেছে, এ সিনেমাটি একযোগে বাংলাদেশের ৩৮টি সিনেমা হলে চলছে।

বহুল আলোচিত এই সিনেমা নিয়ে “‘মুখোশ’ সিনেমা থেকে দূরে থাকুন!” শিরোনামে পর্যালোচনা লিখেছেন সাংবাদিক জাহিদ আকবর। তিনি বর্তমানে দ্য ডেইলি স্টারে অনলাইন রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার লেখা এ রিভিউটি হাঙ্গামা২৪’এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘মুখোশ’ সিনেমা থেকে দূরে থাকুন!
‘মুখোশ’ সিনেমা থেকে দূরে থাকুন!


‘মুখোশ’ সিনেমা থেকে দূরে থাকুন!

লিখেছেন : জাহিদ আকবর


যেসব দর্শক সিনেমায় আইটেম গান দেখতে চান তাদের জন্য ‘মুখোশ’ সিনেমা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কিংবা যারা অযথা মারামারি ও দেশের বাইরের লোকেশন দেখতে পছন্দ করেন তারাও ‘মুখোশ’ থেকে দূরে থাকুন। আর যারা সিনেমার মধ্যে অভিনয়, গল্প, সংলাপনির্ভর সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন তাদের জন্য ‘মুখোশ’ সিনেমায় সব আছে। তাদের মুগ্ধ করবে এই সিনেমাটি।

সাধারণত যখন কোনো সিনেমায় ভালো একজন অভিনয়শিল্পী থাকেন, তখন অন্য শিল্পীদের মাঝেও তার প্রভাব পড়ে। এই সিনেমায় মোশাররফ করিম ও আজাদ আবুল কালাম একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। এই যুগলবন্দি দীর্ঘদিন মনে রাখবেন দর্শক। এর আগেও যতবার তারা পর্দায় মুখোমুখি হয়েছেন প্রতিবারই অভিনয়ে আলো ছড়িয়েছেন। নিজেদের অভিনয়ের বিভিন্ন কলা দেখানোর চেষ্টা করেছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

তাদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন পরীমনি। তিনি যে দুর্দান্ত একজন অভিনয়শিল্পী তার স্বাক্ষর রেখেছেন নিজের চরিত্রে পরিমিতি অভিনয়ের মাধ্যমে।

তবে, সিনেমার শুরুর দিকে উচ্চস্বরে সংলাপ বলেছেন রোশান। অবশ্য শেষ দিকে আবার নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সিনেমায় একজন সুপারস্টার নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু, পোশাকে বা ভঙ্গিমায় তার দেখা মেলেনি পর্দায়। আগামীতে হয়তো এসব ভুল কাটিয়ে উঠবেন তিনি।

ইরেশ যাকের সাবলীলভাবে তার চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছেন। প্রাণ রায় নিজের অনেক অভিনীত চরিত্র থেক বের হয়ে স্টাইলিশ চরিত্রটি খুব মন্দ করেননি। এলিনা শাম্মী যতটুকু সময় পর্দায় ছিলেন তার উপস্থিতি চমকপ্রদ ছিল। অলংকার চৌধুরীকে পর্দায় দেখতে ভালো লাগলেও অভিনয়ে কিছুটা ঘাটতি ছিল মনে হয়েছে।

সিনেমাটির গান নিয়ে হতাশ হতে পারেন দর্শক। কারণ টাইটেল গান ছাড়া অন্য গান তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি।

সিনেমার গল্পে পর্দায় টানটান উত্তেজনা উপভোগ করবেন দর্শক। কিছু সংলাপ মনে দাগ কাটবে। তবে, কিছু ঘটনা অবাস্তব মনে হয়েছ। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সিনেমার চরিত্রের সুপারস্টার নায়ক যখন-তখন যেখানে ইচ্ছা চলে যাচ্ছেন। কিন্তু, মানুষের ভিড় হচ্ছে না। লেখক আজাদ আবুল কালামকে খুঁজতে গিয়ে ৩ জনের বোরকা পরে অভিযানের সময়ের কিছু অংশ অবাস্তব মনে হয়েছে। চাইলে এই দৃশ্য আরও গুছিয়ে করা যেত। ক্রাইম রিপোর্টার সোহানাকে তার ক্যামেরাম্যান বারবার ম্যাডাম ম্যাডাম বলে সম্বোধন করছিলেন। আপা বলতে দেখেছি, কিন্তু ম্যাডাম নয়। হাসির সংলাপ ক্যামেরাম্যান চরিত্রের অভিনেতা জমাতে পারেননি। সিনেমার চিত্রনাট্য আরেকটু গোছানো হলে আরও ভালো হতো ‘মুখোশ’। যেহেতু এটি ইফতেখার শুভ পরিচালিত প্রথম সিনেমা তাই ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা যায়। আমাদের বিশ্বাস তিনি আগামীতে এসব বিষয়ে আরও ভাববেন।

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url