Riaz : চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রিয়াজ

Riaz - রিয়াজ
Riaz - রিয়াজ

চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রিয়াজ


বাংলাদেশের সিনেমা অঙ্গনের সবথেকে বড় পুরষ্কার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার’। তবে এই পুরষ্কার আর বিতর্ক যেনো মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। প্রায় প্রত্যেক বছরই পুরষ্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশের পরপরই শুরু হয় সমালোচনা। উঠে আসে অযোগ্য, মানহীন, চুরি করা শিল্পের কারণে পুরষ্কার পাওয়ার ঘটনা। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তথ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে। সে প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, ২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমায় ব্যবহৃত ‘তুই কি আমার হবি রে’ গানের জন্য এবারের আসরে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন কবির বকুল। অন্যদিকে ‘হৃদয় জুড়ে’ সিনেমার ‘বিশ্বাস যদি যায় রে ভেঙে’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের পুরস্কার পাচ্ছেন বেলাল খান। আবার কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বীর’ সিনেমায় ‘ভালোবাসার মানুষ তুমি’ শিরোনামের গানের জন্য সেরা গায়িকা হিসেবে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন কোনাল।

এই তিনটি পুরস্কার নিয়েই এবার শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। কেননা ‘তুই কি আমার হবি রে’ গানের পুরো একটি লাইন হুবহু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার সঙ্গে মিলে যায়। অন্যদিকে বেলাল খান যে গানটির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, সেই গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন বলে দাবি করেছেন এম এ রহমান নামের আরেক সংগীত পরিচালক। এ নিয়ে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। এম এ রহমানের এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধেই জিডি করেছেন গায়ক বেলাল। 

আবার এদিকে কোনাল যে গানের জন্য পুরষ্কার পাচ্ছেন, সে গানের মূল ব্রিজ লাইন হুবহু নকল করা হয়েছে আশির দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অবুঝ হৃদয়’ সিনেমার ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’ গান থেকে। এ গানটি গেয়েছিলেন কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোর। অবাক করা বিষয় হলো মূল গান থেকে কপি করে এনে নকল গানের কথাও লিখেছেন কবির বকুল। জানা গেছে, এই গানটির সুরও নকল করা।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রসঙ্গে কথা হয় চিত্রনায়ক রিয়াজের সঙ্গে। কারণ তিনি এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “জুরি বোর্ড জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয় না, কেবল সুপারিশ করে। সেই সুপারিশ সবসময় চূড়ান্ত বলে বিবেচিত না-ও হতে পারে। তাই জুরি বোর্ডের সুপারিশ যদি কেউ পরিবর্তন করে ফেলে, সেক্ষেত্রে আমাদের বলার কিছু থাকে না।”

বিতর্কিত পুরষ্কার তিনটি তাহলে জুরি বোর্ডের সুপারিশের বাইরে গিয়ে দেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে একসময়ের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক বলেন, “এটা আসলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। আমরা জুরি বোর্ড একটা নির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে কাজ করি। আমরা গোপনীয়তা প্রকাশ করতে পারি না। জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে কেবল এতটুকু বলতে পারি, আমাদের সুপারিশ আসলে শতভাগ রাখা হয় না। আমাদের ওপরেও কিছু বিষয় থাকে। কারণ আমরা পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নই।”

নকল চুরি করা গানের প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, “অবশ্যই কোনো নকল গান পুরস্কার পেতে পারে না। আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে এ ব্যাপারটি বিবেচনা করি। জুরি বোর্ডের সুপারিশও সেভাবেই হয়। এখানে যারা থাকেন, তারা তো একেবারে গণ্ডমুর্খ থাকেন না। কিন্তু জুরি বোর্ডের সুপারিশ যদি পরিবর্তন হয়ে যায়, সেখানে তো আসলে বোর্ডের করার কিছু নেই। সুতরাং বিতর্কের দায় জুরি বোর্ডের ওপর বর্তায় না।”

উল্লেখ্য, শুধু ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডেই নয় ২০১৯ সালের জুরি বোর্ডে ছিলেন রিয়াজ। এর ফলে পরপর দুইবার এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২০ এ সর্বোচ্চ ১১টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে ‘গোর’ সিনেমাটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮টি বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘বিশ্বসুন্দরী’।

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url