Riaz : শ্বশুরের ‘আত্মহত্যা’য় মামলা করলেন রিয়াজ
শ্বশুরের ‘আত্মহত্যা’য় মামলা করলেন রিয়াজ |
শ্বশুরের ‘আত্মহত্যা’য় মামলা করলেন রিয়াজ
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসায় ব্যক্তিগত বৈধ পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। আত্মহত্যা করার সময় তিনি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের লাইভে ছিলেন। সেখানে তিনি ব্যক্তিগত অনেক কথা তার লিস্টের মানুষদের বলে গেছেন। জানা গেছে আত্মহত্যার আগে একটি ‘সুইসাইড নোট’ রেখে গেছেন আবু মহসিন খাঁন।
শ্বশুরের এমন আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। এ প্রসঙ্গে ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “আবু মহসিন খানের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন তার মেয়ের জামাই চিত্রনায়ক রিয়াজ।”
আত্মহত্যার আগে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে জীবনের অনেক হতাশা ও প্রতাররণার শিকার হওয়ার কথা বলে গেছেন আবু মহসিন খান। তার আত্মহত্যার ঘটনার ভিডিও দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই লাইভ ভিডিওতে আবু মহসিন খানের দেওয়া বক্তব্যে যাদের কথা উঠে এসেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, “আমি বর্তমানে আমি ক্যানসারের রোগী। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছুই নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো—মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে এক্সপেরিয়েন্স, সেটা শেয়ার করলে হয় তো সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে। আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে। আমার বাসায় আমি সম্পূর্ণ একা থাকি। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়েও থাকি, আমার মনে হয় না যে, এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি।”
“গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকে, তারাই একমাত্র বলতে পারেন বা বোঝেন।” তিনি আরও বলেন, “যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। যাকে আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।”
ফেসবুক লাইভ থেকে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছে, আবু মহসিন খান ব্যক্তিগত জীবনে খুবই হতাশ ছিলেন। তার পরিচিতরা তার সাথে প্রতারণা করেছেন এবং তার একাকিত্বই এই আত্মহত্যার কারন। তবে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আত্মহত্যার আগে চিরকুটে কি লিখে গেছেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান?
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. সাজ্জাদুর রহমান। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবনে নিজের ফ্ল্যাটেই থাকতেন আবু মহসিন খান। তিনি একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। আমরা ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। সে চিরকুটে লেখা রয়েছে, ব্যবসায় ধস নেমে যাওয়ায় আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে অনেকের লেনদেন ছিল। কিন্তু তারা টাকা দেয়নি।”
“আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়” এ বাক্যটিও লেখা ছিলো আবু মহসিন খানের সুইসাইড নোটে। পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান জানিয়েছেন, মহসিন খান ২০১৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে পরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
উল্লেখ্য, ৫৮ বছর বয়সী আবু মহসিন খান ছিলেন পোশাক শিল্পের কাচামাল ব্যবসায়ী। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর আবু মহসিনের মেয়ে মডেল মুশফিকা তিনাকে বিয়ে করেন চিত্রনায়ক রিয়াজ।
হাঙ্গামা/সানজানা