Anjana : জায়েদকে ছেড়ে কাঞ্চনের কাছে ফিরলেন অঞ্জনা
জায়েদকে ছেড়ে কাঞ্চনের কাছে ফিরলেন অঞ্জনা |
জায়েদকে ছাড়লেন অঞ্জনা; ফিরলেন কাঞ্চনের কাছে
সবার দৃষ্টি এখন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দিকে। কারণ এ সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা নাটকীয়তা। ইলিয়স কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল যখন শপথ গ্রহন করছিলেন, তখন থেকেই শোনা যাচ্ছিলো আলাদাভাবে শপথ গ্রহন করবেন মিশা-জায়েদ প্যানেলের নির্বাচিত সদস্যরা। আবার যখন নায়িকা রোজিনা পদত্যাগ করলেন তখন জোড়ালোভাবে গুঞ্জন উঠেছিলো এই প্যানেলের নির্বাচিত সবাইই একে একে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু এ পর্যায়ে এসে ঘটনা মোড় নিলো ভিন্ন দিকে।
কালজয়ী চিত্রনায়িকা অঞ্জনাও এবার নির্বাচন করেছিলেন। সবারই ধারণা ছিলো তিনি ইলিয়াস কাঞ্চনের প্যানেলের হয়ে লড়বেন। কেননা একসময় কাঞ্চনের নায়িকা ছিলেন তিনি। কিন্তু অঞ্জনা তা করেননি। যুক্ত হয়েছিলেন মিশা-জায়েদ প্যানেলে। নির্বাচনে কার্যকরী সদস্য পদে জয়ীও হয়েছেন এই নায়িকা। তবে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জটিলতা শুরু হওয়ায় তিনি এবং তার প্যানেলের কেউই শপথ গ্রহণ করেননি।
গুঞ্জন ছিলো, আদালতের রায়ে যদি জায়েদ খান হেরে যায়, তাহলে তাদের প্যানেলের নির্বাচিত সবাই পদত্যাগ করবেন। তার আংশিক প্রমাণ মিলেছে নায়িকা রোজিনার পদত্যাগে ও নায়ক রুবেলের পদত্যাগ করার অগ্রীম ঘোষণায়। কিন্তু ভিন্ন পথেই হাঁটলেন অঞ্জনা। প্যানেলের সবাইকে ছেড়ে তিনি একাই গেলেন নব-নির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে। শুধু তাই নয় অঞ্জনা কার্যকরী সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণও করেছেন।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এফডিসিতে চিত্রনায়িকা অঞ্জনাকে শপথবাক্য পাঠ করান ইলিয়াস কাঞ্চন। এ সময় নায়িকা নিপুণ, কেয়া, জেসমিন, নায়ক ফেরদৌসসহ শিল্পী সমিতির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
কার্যকরী সদস্য পদে শপথ গ্রহণের পর অঞ্জনা বলেন, ‘‘আমি শপথ নেওয়ার আগে সবার সঙ্গে কথা বলেই এসেছি। তবে আমি ব্যক্তিগত ইচ্ছায়ই শপথ নিলাম। ইলিয়াস কাঞ্চন আমার ১৭ সিনেমার নায়ক, তার কাছ থেকে শপথ নিয়ে বেশ ভালো লাগছে। যেহেতু আমি শপথ নিয়েছি, তাই এখন থেকে শিল্পী সমিতির সকল কার্যক্রমে আমি যুক্ত থাকবো। সব সময় শিল্পীদের পাশে থাকব।’’ এ সময় তিনি মিশা-জায়েদ প্যানেলের অন্য নির্বাচিত সদস্যদেরও শপথ গ্রহণের আহ্বান জানান।
শপথ গ্রহণের আগে অঞ্জনা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আজ আমি শপথ নেবো। শপথ পাঠ করাবেন আমাদের প্রেসিডেন্ট ইলিয়াস কাঞ্চন। তাছাড়া সমিতির সবইতো ঠিক আছে। শুধু সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আদালতের আদেশ আসবে। এ পদে যেই আসুক এতে আমাদেরতো কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবাই শিল্পী।
শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন কালজয়ী নায়িকা রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, অরুণা বিশ্বাস ও মৌসুমী। কিন্তু তারা প্রত্যেকেই একসময় ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়িকা ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। তখন এ বিষয়ে জায়েদ খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি ম্যাজিক দেখিয়ে নায়িকাদের নিজের পক্ষে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নির্বাচনের আপিল বিভাগ তার প্রার্থীতা বাতিল করে। এরপর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদালত। এর জেরে নিপুণ আপিল করলে চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে এবং সাধারণ সম্পাদক পদের স্থিতাবস্থা জারি করে।
১৪ ফেব্রুয়ারির শুনানিতে চেম্বার আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুলের নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। এই আদেশের পর ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, এ মর্মে জারি করা রুল শুনানির জন্য আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
হাঙ্গামা/সানজানা