Riaz : মাথায় গুলি করে শ্বশুরের আত্মহত্যা: কিছুই বলছেন না রিয়াজ (ভিডিও)
মাথায় গুলি করে শ্বশুরের আত্মহত্যা |
মাথায় গুলি করে শ্বশুরের আত্মহত্যা: কিছুই বলছেন না রিয়াজ
চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসায় আবু মহসিন খান আত্মহত্যা করেছেন। শ্বশুর এভাবে আত্মহত্যা করলেও কিছুই বলছেন না রিয়াজ।
এ প্রসঙ্গে জানতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে রিয়াজকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না।’ এটুকু বলেই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর আবু মহসিনের মেয়ে মডেল মুশফিকা তিনাকে বিয়ে করেন রিয়াজ। জানা গেছে আত্মহত্যার আগে চিরকুটে সবকিছু লিখে গেছেন নায়ক রিয়াজের এই শ্বশুর।
ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, উনার (মহসিন) যারা ফলোয়ার ছিলেন, তারা ঘটনাটি দেখে ৯৯৯ এ ফোন দেন। পরে পুলিশ ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলা থেকে মহসিনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, চেয়ারের মধ্যে মৃতদেহ আর পাশেই তার বৈধ পিস্তলটি পড়েছিল। পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটে আর কেউই ছিলেন না। তার স্ত্রী ও সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। কেন আত্মহত্যা করেছেন, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রস্তুতি নিয়েই এই আত্মহত্যা করেছেন। চিরকুটে সবকিছু লিখে গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন, ব্যবসা করতেন এবং লোকসানের ভারে কীভাবে জর্জরিত হয়েছেন, সব কিছুই লিখেছেন।
মাথায় গুলি চালানোর আগে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের লাইভে এসে কথা বলেছেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খাঁন। এ সময়ে তিনি ব্যক্তিগত নানা হতাশার কথা তুলে ধরেছিলেন।
ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন আবু মহসিন খাঁন। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহননের পথ বেছে নেন। তার আত্মহত্যার ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আত্মহত্যার আগে আবু মহসিন খাঁনের দেওয়া বক্তব্যে যাদের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
লাইভে তিনি বলেছেন, আমি মহসিন। ঢাকায় থাকি। আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো এক সময়ে আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারের রোগী। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছুই নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো—মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে এক্সপেরিয়েন্স, সেটা শেয়ার করলে হয় তো সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। তার একটি ছেলে আমেরিকায় থাকেন, মা মারা গেল অথচ ছেলেটি আসল না। এটা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। কষ্ট লেগেছে। আজকে আমার আরেক খালা মারা গিয়েছেন। তারও একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। অবশ্য তার তিনটা ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তিনজনই বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন। তারা হয়তো দাফন–কাফনের কাজ সম্পন্ন করছে। সেদিক দিয়ে বলব, এই খালা অনেকটা ভাগ্যবান।
মহসিন খাঁন জানান, আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে। আমার বাসায় আমি সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়েও থাকি, আমার মনে হয় না যে, এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি।
তিনি বলেন, ছেলেমেয়ে স্ত্রী যাদের জন্য যাই কিছু আমরা করি। আমরা সব কিছু করি সন্তান এবং ফ্যামিলির জন্য। আপনি যদি একশ টাকা ইনকাম করেন, আয় করেন, তার টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকাও আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন না। যদি টোয়েন্টি পারসেন্ট টাকা আপনি নিজের জন্য ব্যয় করেন, তাহলে ৮০ পারসেন্ট টাকা আপনার ফ্যামিলির জন্য ব্যয় হয়।
‘গত করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকে, তারাই একমাত্র বলতে পারে বা বোঝেন।’
তিনি জানান, যাদের জন্য আমি বেশি করছি, প্রত্যেকটা লোকের কাছে আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল, নাম কামরুজ্জামান বাবলু। যাকে আমি না খেয়ে তাকে খাইয়েছি। সে আমার ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে।
ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন ব্যবসায়ী মহসিন খাঁন। রাত পৌনে ১০টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করেন তিনি।
হাঙ্গামা/সানজানা