Raima Islam Shimu : যেভাবে সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন শিমু

যেভাবে সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন শিমু
যেভাবে সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন শিমু

যেভাবে সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন শিমু


সম্প্রতি নির্মমভাবে খুন হন চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু। তিনি ১৯৯৮ সালে বরেণ্য পরিচালক কাজী হায়াৎ’র হাত ধরে চলচ্চিত্রে নাম লেখান। এর পর বেশকিছু আলোচিত সিনেমায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। সিনেমাগুলোতে দক্ষতার সাথে অভিনয় করে নির্মাতাদের আস্থা অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি। নিজেকে আরো ভালোভাবে মেলে ধরার যুযোগ হয়তো তার ছিলো। কিন্তু সে সুযোগ আর তিনি পেলেন না। হত্যার শিকার হয়ে অকালেই পৃথিবী ছাড়তে হলো তাকে।

রাইমা ইসলাম শিমু আজ থেকে ২৪ বছর আগে সিনেমায় কাজ করার সুযোগ পান। সে সময়ের আলোচিত সিনেমা ‘বর্তমান’ তার অভিনিত প্রথম সিনেমা। অকালে চলে যাওয়া এই নায়িকা কিভাবে সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পান, তা নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা হবেন বরেণ্য নির্মাতা কাজী হায়াৎ।

২৪ বছর আগে শিমুর খোজ পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “ওর (শিমু) ভাই খোকন এফডিসিতে ঘোরাঘুরি করত। তার সঙ্গে চিত্রনায়ক মান্নার ভাইয়ের যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রে মান্নার সঙ্গে শিমুর পরিচয়। একদিন শিমুকে নিয়ে এলো মান্না। সে বলল- হায়াৎ ভাই, দেখেন তো এই মেয়েটা চলে কি না? সিনেমায় অভিনয় করার তার খুব আগ্রহ। আমিও বললাম, ওকে। এরপরই আমার সিনেমা ‘বর্তমান’-এ প্রথম কাজ করল। এরপর ‘মিনিস্টার’–এ অভিনয় করে। আমার এই দুইটা সিনেমায় মান্নার অনুরোধে শিমুকে নিয়েছিলাম।”

তিনি বলেন, “শিমু একজন শিল্পী। আফটার অল দারুণভাবেই শিল্পীমনা ছিল। তীব্র ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র এবং শিল্প অঙ্গনে কিছু করার। মেয়েটা আমার চোখে ভীষণ ভালো ছিল। মান্না ওকে আদর করত, আমিও ওকে ভালো জানতাম। কিন্তু আজ বস্তাবন্দি লাশের কথা শুনে তো বিস্মিত হলাম, ভীষণ দুঃখজনক। শান্ত মেয়েটাকে এভাবে মারল! আহ্‌হা...। মেয়েটার তো একটা মেয়ে আর একটা ছেলেও ছিল। কী হবে ওদের! এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসা উচিত। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”
 
চিত্রনায়িকা শিমুকে সর্বশেষ ২০০৪ সালে দেখা যায় শাহাদাৎ খান পরিচালিত ব্যবসাসফল সিনেমা ‘জামাই শ্বশুর’-এ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। এ সিনেমায় তাকে কাস্টিং প্রসঙ্গে এই সিনেমার কাহিনীকার আবদুল্লাহ জহির বাবু তার ফেসবুক একাউন্টে বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি লেখেন, “সিনেমাটির জন্য একজন শিল্পী প্রয়োজন যিনি পূর্ণিমার বড় বোনের চরিত্রে অভিনয় করবেন। তখনই হঠাৎ আমার শিমুর কথা মনে পড়ে। তার সাথে পরিচয় হয়েছিল স্বপন চৌধুরী স্যারের অফিসে। ওর (শিমু) মন খোলা হাসি আর অসাধারণ ব্যবহারের জন্য ওর কথা আমার মনে ছিলো। তখন শিমু আমার বাসার সামনে রামপুরা এলাকায় থাকত। ডাকলাম তাকে, প্রযোজক ফরহাদ ভাই আর পরিচালক শাহাদাত ভাই এক নজর দেখেই  নির্বাচিত করলেন শিমুকে। কয়েকদিনের মধ্যে দিনাজপুরে আউটডোর শুটিংয়ে গেল ইউনিট, দুর্দান্ত কাজ করল শিমু।”

তিনি আরো লেখেন, “হায়রে সুখ...নিজের দুঃখটাকে সবসময় লুকিয়েছে মেয়েটা। শুধু একটু সুখের আশায়। আল্লাহতালার কাছে প্রার্থনা, শিমুর সমস্ত জাগতিক ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে, তার আত্মাকে শান্তি দিন। তাকে বেহেস্ত নাসীব করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।”

গত ১৭ জানুয়ারি (সোমবার) ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আলিপুর ব্রিজ সংলগ্ন কদমতলীর এলাকায় সেদিন সকালে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং উদ্ধার করে। তৎক্ষনাত তার পরিচয় জানতে না পারলেও দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, বস্তাবন্দি লাশটি ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর।

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url