মিশা-জায়েদের কেড়ে নেয়া ভোটাধিকার ফিরে পেয়ে কাঁদলেন শিল্পীরা

মিশা-জায়েদের কেড়ে নেয়া ভোটাধিকার ফিরে পেয়ে কাঁদলেন শিল্পীরা
কাঁদলেন শিল্পীরা

মিশা-জায়েদের কেড়ে নেয়া ভোটাধিকার ফিরে পেয়ে কাঁদলেন শিল্পীরা


মিশা-জায়েদ কমিটির আপত্তির মুখে ভোটাধিকার হারান ১৮৪ জন চলচ্চিত্র শিল্পী। তারা সমিতির সদস্য হয়েও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গত নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। তারপর থেকেই আইনি লড়াইয়ে নামেন তারা। ১৮৪ জনের পক্ষে আদালতে মামলা করেছিলেন ১৮ জন ভোটাধিকার হারানো চলচ্চিত্র শিল্পী।

দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ১১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে ১৮৪ জন শিল্পীর ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন মামলার বাদী রমিজ, সাদিয়া মির্জা ও খোকন পাশা। এরপর তারা একটি আনন্দ মিছল নিয়ে এফডিসিতে যান। তখন তারা ভোটাধিকার ফেরত পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অনেকেই কেঁদে ফেলেন।

আনন্দ মিছিল শেষে সাংবাদিকদের তারা বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে আমরা রায় পেয়েছি। দীর্ঘদিনের এ লড়াই ছিল আমাদের অধিকার রক্ষার লড়াই। আমরা খুব আনন্দিত। অবশেষে আমরা সফল হলাম। অবৈধভাবে আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। এর জবাবদিহি তাদের দিতে হবে।

এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া মির্জা বলেন, “আমাদের এই আনন্দের ভাষা বলে বোঝানো যাবে না। অনেক অপমান সইতে হয়েছে আমোদের। তারা অন্যায়ভাবে আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। তাদের অন্যায়ের বিচার হয়েছে। আমরা ভোটাধিকার ফেরত পেয়েছি। এবারের নির্বাচনেই আমরা ভোট দিতে পারবো।”

আরেক বাদী খোকন পাশা হাঙ্গামা২৪-কে বলেন, “অনেক অপেক্ষার পর আজ আমরা জিতেছি। সত্যের জয় একদিন আসবেই, তার প্রমাণ পেলাম আজকের রায়ে। হাইকোর্টের রায় পেয়ে আমি আনন্দে কেঁদে ফেলেছি। আজ স্মরণ করছি এই ভোটাধিকার ফেরত পাওয়ার আন্দোলনের ১৯ জন সঙ্গীকে। যারা গত দুই বছরে মারা গেছেন। তারা সমিতির সদস্য ছিলেন। অসহায়ভাবে করুণ অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে অনেকের। মিশা-জায়েদের কমিটি তাদের খবর রাখেনি। অন্যায়ের পরাজয় হয়েছে।”

আগামী ২৮ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নির্বাচনের আগেই ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পেয়ে আনন্দিত শিল্পীরা। তারা জানিয়েছেন, অভিনেত্রী নিপুণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে অনেক সহায়তা করেছেন। এবার ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলকে সমর্থন করবেন তারা।

এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী নিপুণ বলেছেন, “এতজন সদস্য ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করেছেন, আন্দোলন করেছেন এটা দেখে হতাশ হয়েছিলাম। তারা আজ অধিকার ফিরে পেয়েছেন দেখে খুব ভালো লাগছে।”

মামলার তিন বাদী জানিয়েছেন, আদালত আদেশ দিয়েছে যে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ১৮৪ জন সদস্যের ভোটাধিকার ফেরত দিতে। সেই সঙ্গে তাদের ভোটের অধিকার বাতিল করা কেন অবৈধ হবে না এই মর্মে বর্তমান কমিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ সালের শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সমিতির মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৬২৪ জন। মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেল বিজয়ী হওয়ার পর এ তালিকা থেকে ১৮৪ জন চলচ্চিত্র শিল্পীর ভোটাধিকার বাতিল করে কেবল সহযোগী সদস্য করা হয়। সে সময় ভুক্তভোগী শিল্পীদের তরফ থেকে জায়েদ-মিশার পদত্যাগের দাবিও তোলা হয়।

প্রসঙ্গত, আসছে ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। সবকিছু ঠিক থাকলে এই দিন অনুষ্ঠিত হবে ২০২২-২৩ মেয়াদের নির্বাচনটি। এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দুটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। একটি ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ প্যানেল, অন্যটা সদ্য বিদায়ি কমিটি মিশা-জয়েদ প্যানেল। 

এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অভিনেতা পীরজাদা হারুন। অন্য দুজন সদস্য হলেন বিএইচ নিশান ও বজলুর রাশীদ চৌধুরী। নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান থাকবেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে। পাশাপাশি আপিল বোর্ডের সদস্য হিসেবে থাকবেন মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেন।

হাঙ্গামা/সানজানা
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url