যে হ্রদ থেকে ফিরে আসেনি কেউ!

লেক অব নো রিটার্ন / নায়াং ইয়াং হ্রদ
লেক অব নো রিটার্ন / নায়াং ইয়াং হ্রদ

যে হ্রদ থেকে ফিরে আসেনি কেউ!


বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের নাম প্রায় সবাই জানে। এর কথা উঠলেই কেমন একটা আতংক ঘিরে ধরে। কারণ একটাই। আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ওপর দিয়ে এখন পর্যন্ত নাকি বহু বিমান, জাহাজ গিয়ে আর ফিরে আসেনি। এসব নিয়ে অনেকেই অনেক মনগড়া কিছু ভেবে নেয়।

তবে বারমুডার মতোই এমন একটি হ্রদ রয়েছে, যেখানে যাওয়ার পর নাকি রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে অনেক মানুষ। এ হ্রদ বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের গা-ঘেঁষা অরুণাচলে অবস্থিত নায়াং ইয়াং হ্রদই সে হ্রদ। লোককথা আছে, এই হ্রদ অভিশপ্ত। এখান থেকে প্রতিবছর হারিয়ে যায় অনেক মানুষ। তারা কোথায় যায়, কি হয় তাদের, তা কেউই জানেনা।

রহস্যজনক এই হ্রদ বর্তমানে জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। এই হ্রদের নাম ‘নায়াং ইয়াং’ হলেও একে সবাই ‘লেক অব নো রিটার্ন’ নামেই চেনে। ভারতের অরুণাচল প্রদেশের চাংলাং জেলায় অবস্থান করা এই হ্রদের একাংশ মিয়ানমারের পানসা এলাকাতেও রয়েছে। দেশটির সীমান্ত ঘেঁষা ঐ ছোট্ট অঞ্চলে টাংগাস নামের উপজাতির বাস।

লোকমুখে জানা যায়, এই রহস্যের শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। স্থানীয় লোকেদের মতে, যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিলো তখন মিত্র শক্তির অনেক দেশই তাদের বিমান জরুরি অবতরনের জন্য এই হ্রদের আশেপাশের জায়গা ব্যবহার করতো। তবে অবতরনের পর সে সব বিমান থাকা কোনো মানুষই আর ফিরে যেতে পারেননি।

স্থানীয় আদিবাসিরা জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক দল জাপানি সৈন্য পথ হারিয়ে ফেলেন। তখন তারা ঘুরতে ঘুরতে একসময় অরুণাচলের এই হ্রদের কাছে চলে গিয়েছিলেন। একদিন পরেই তারা সবাই রহস্যজনকভাবে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এরপর একে একে সবাইই সেখানে মারা যায়। সেই সৈন্যরা কেউই আর দেশে ফিরতে পারেননি। ইজরায়েলের লেখক স্টিভেন এম কলিন্স তার ‘দ্য “লস্ট” টেন  ট্রাইবস অব ইজরায়েল... ফাউন্ড!’ নামের গবেষণামূলক বইয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছিলেন। স্টিভেন এম কলিন্স তার বইয়ে লিখেছেন, ‘লেক অব নো রিটার্ন’ হ্রদে হারিয়ে যাওয়া জাপানি জনগোষ্ঠির একটি অংশ এই হ্রদ এলাকায় এখনো লুকিয়ে রয়েছে। যদিও তার এমন আজগুবি দাবির কোনো যৌক্তিকতা পাওয়া যায়নি।

টাংগাস উপজাতিদের ভেতর একটি লোককথার প্রচলন রয়েছে। তাদের মতে, বহুযুগ আগে এই এলাকার এক ব্যক্তি এই হ্রদে মাছ ধরতে যান। সেখানে থেকে তিনদিন পর একটি বিশাল আকারের মাছ ধরে আনেন। সেটা কেটে রান্না করে খেয়েছিলেন ঐ ব্যক্তি ও তার পরিবার। এমনকি পুরো গ্রামের মানুষকেও খাইয়েছিলেন। এরপরই নাকি পুরো গ্রামটি হ্রদের পানিতে উধাও হয়ে যায়। 

হাঙ্গামা২৪/লুবনা বারৈ
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url