প্রসঙ্গ : বস্তাপচা বাংলা চলচ্চিত্র

বস্তাপচা বাংলা চলচ্চিত্র - জাহিদা সুমি
বস্তাপচা বাংলা চলচ্চিত্র - জাহিদা সুমি


প্রসঙ্গ : বস্তাপচা বাংলা চলচ্চিত্র

লেখক: জাহিদা সুমি


বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী দিন অতীত হয়েছে অনেক আগেই। দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক সিনেমা ঠিকই হচ্ছে। কিন্তু দিন শেষে সেগুলো কতটা সিনেমা হয়ে উঠেছে, তা বোধগম্য নয় উক্ত সিনেমাগুলির কলাকুশলিদেরও। সিনেমার মোড়কে যা নির্মাণ হচ্ছে তাতে দিনকে দিন দর্শকদের আগ্রহতো হারাচ্ছেই, সাথে দেশের ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করছে। এ প্রসঙ্গকেই উপজীব্য করেই কলম ধরেছেন জাহিদা সুমি। নির্মাতা থেকে শুরু করে অভিনেতা পর্যন্ত সবার উদ্দেশ্যেই একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি। ‘প্রসঙ্গ : বস্তাপচা বাংলা চলচ্চিত্র’ শিরোনামের সেই খোলা চিঠি হাঙ্গামা ২৪-এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।


একজন চলচ্চিত্র প্রেমী হিসেবে চাই বাংলা চলচ্চিত্র বিশ্বজয় করুক। কিন্তু তা যে কতদিনে সম্ভব আমার জানা নেই। তবে অন্যরকম হাই লাগা শুরু হয়েছে...

এবার মূলকথায় আসি... একশ্রেণীর নির্মাতাগণ নাকি রিকশাওয়ালাদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। প্রথমেই এই সৎ পেশাজীবীদের নিচু চোখে দেখা হলো। এখন চিন্তা করেন, এদের জন্য যারা চলচ্চিত্র বানায় তারা কত নিচু? মানে তারা চায় না নিচু লোকগুলো ভালো,  মানসম্মত চলচ্চিত্র দেখে একটু মানসিকভাবে উন্নত হোক। 

আচ্ছা, আমাদের দেশে রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালা আর শ্রমিকের সংখ্যা কত। নিঃসন্দেহে মধ্যবিত্তের চেয়ে কম। তাছাড়া সিনেমাপ্রেমীরা বেশিরভাগ স্বল্পশিক্ষিত বা শিক্ষিত তরুন তরুণী। তারাও কি বস্তাপচা চলচ্চিত্র ডিসার্ভ করে??? ভালো চলচ্চিত্র কি নিম্নশ্রেণীর মানুষ দেখতে পাবে না? তাহলে ভালো আর মন্দের পার্থক্য তো তারা ৫০০ বছরেও টের পাবেনা।

বুঝলাম নির্মাতাগণ নির্ধারিত এক শ্রেণীকে বিনোদন দিতে চায় কিন্তু বাকী লোকগুলো কি দোষ করলো? তারা কি সব শ্রেণীকে বিনোদন দিতে নারাজ নাকি দর্শক অপারগ তাদের চলচ্চিত্র হজম করতে? সত্যি বলতে এদের মুরোদ নাই, মাথায় ঘিলু নাই, পরিশ্রম করার মানসিকতা নাই। 

একসময় বলা হতো অশ্লীলতা ছাড়া সিনেমা চলে না। তারপর থেকেই বিশাল এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী হলবিমুখ। ফলাফল একের পর এক সিনেমাহল বন্ধ। আর বস্তাপচা চলচ্চিত্রের ধুঁকে ধুঁকে পথ চলা। কোনো কোনো অভিনেতা ইন্ডাস্ট্রিকে নাকি টেনে এনেছে এতদূর। কি পেয়েছি আমরা তাদের কাছে বরং পিছিয়ে গেছি ৭০ বছর। তারা চাইলে অনেক কিছুই পারতেন কিন্তু এখানেও তাদের অবস্থা নির্মাতাদের মতই। 

প্রিয় নির্মাতাগণ, আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ এই প্রযুক্তির যুগে বস্তাপচা সিনেমা বানানো বন্ধ করুন। মনপুরা, আয়নাবাজি, ঢাকা অ্যাটাক রিকশাওয়ালারাও দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও দেখছে। তাহলে আর কেনো এসব বস্তাপচা চলচ্চিত্র??? 

সিনেমার কাজ কি শুধু নোংরা ও অখাদ্য বিনোদন দেয়া? অবশ্যই না। এটা শিক্ষা, পরিবর্তন এবং উন্নয়নের হাতিয়ার।

উল্লেখ্য, উক্ত লেখাটি বাংলা চলচ্চিত্র বিষয়ক একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে নেয়া হয়েছে।

হাঙ্গামা ২৪




হাঙ্গামা২৪-এর এই বিভাগে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব।

হাঙ্গামা২৪-এ প্রকাশিত কোনো কিছুই বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url