সালতামামি : এ বছর যাদের হারিয়েছি আমরা

এ বছর যাদের হারিয়েছি আমরা
এ বছর যাদের হারিয়েছি আমরা

এ বছর যাদের হারিয়েছি আমরা


দেশের শোবিজের জন্য মোটেও সুখকর ছিলোনা ২০২১। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক গুণীজনকেই বিদায় দিতে হয়েছে এ বছরে। এদর কেউ বার্ধক্যজনিত কারণে, আবার কেউ মহামারী করোনার আক্রমনে বিদায় নিয়েছেন দুনিয়া থেকে। তাদের শূণ্যতা পূরণ করা অসম্ভব। কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া সেই আলোর দিশারীদের নিয়েই হাঙ্গামা২৪-এর আজকের এই প্রতিবেদন। 

অভিনেত্রী আশা চৌধুরী
অভিনেত্রী আশা চৌধুরী

আশা চৌধুরী

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশা চৌধুরী। বছরের শুরুতেই সড়ক দূর্ঘটনায় তার প্রাণ কেরে নেয়। ৪ জানুয়ারি মধ্যরাতে মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় ট্রাক চাপায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেত্রী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী আশা চৌধুরী নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন।

অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান
অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান

এটিএম শামসুজ্জামান

চলতি বছর ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। রাজধানীর সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনেই চিরঘুমের পথে যাত্রা করেন তিনি। এ অভিনেতা শেষযাত্রায় স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। মৃত্যুর আগে বেশ কয়েক বছর ধরে নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন এই অভিনেতা। কর্মজীবনে এটিএম শামসুজ্জামান পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।

সংগীতশিল্পী জানে আলম
সংগীতশিল্পী জানে আলম

জানে আলম

২ মার্চ না ফেরার দেশে চলে যান সংগীতশিল্পী জানে আলম। এর আগে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসার পর তিনি করোনামুক্ত হন। কিন্তু করোনা পরবর্তী জটিলতার কারনে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এই শিল্পী। এতে শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌছলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জানে আলম।

চিত্রনায়ক শাহীন আলম
চিত্রনায়ক শাহীন আলম

শাহীন আলম

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ছিলেন অভিনেতা শাহীন আলম। তার মেয়ের হঠাৎ মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র থেকে সরে গিয়ে ধর্ম-কর্মে মনোযোগী হন তিনি। এরপর থেকে মানসিক অবসাদে তৈরি হয় বিভিন্ন শারিরিক জটিলতা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তার কিডনি। এই সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন এই অভিনেতা। এরপর ৮ মার্চ হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শাহীন আলম।


মিতা হক
মিতা হক

মিতা হক


সংগীতানুরাগীদের কাছে জনপ্রিয় একটি নাম মিতা হক। তিনি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী হিসেবে অসামান্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। গত বছর তিনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন মহামারি করোনায়। শারিরিক অবস্থা খারাপ হলে ভর্তি হন হাসপাতালে। এরপর করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরলেও ফেরা হয়নি সুস্থ জীবনে। করোনা পরবর্তী জটিলতার কারনে গত ১১ এপ্রিল হার্ট অ্যাটাক করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই সংগীতশিল্পী। তিনি জীবদ্দশায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীত কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন মিতা হক।


সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ
সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ

ফরিদ আহমেদ

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩ এপ্রিলে সকালে মারা যান। প্রথম ২০ মার্চ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ২৫ মার্চ দ্বিতীয় বারের মতো করোনা আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট হাতে আসে। এরপর সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ফরিদ আহমেদকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় ১১ এপ্রিল। সেখান থেকে আর ফেরেন নি তিনি। সবাইকে কাদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই সংগীত পরিচালক।

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী

সারাহ বেগম কবরী

১৭ এপ্রিল মৃত্যুবরন করেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। এর আগে ৫ এপ্রিল তিনি করোনা আক্রান্ত হন। ওই রাতেই তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ এপ্রিল আইসিইউতে নেওয়া হয় কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীকে। এরপর আরো অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় তাকে। এতোকিছুর পরেও ধরে রাখা যায়নি তাকে। দুদিন পরই সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান মিষ্টি মেয়েখ্যাত অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ কবরী।

চিত্রনায়ক ওয়াসিম
চিত্রনায়ক ওয়াসিম

চিত্রনায়ক ওয়াসিম

ঢাকাই সিনেমার সোনালি যুগের জনপ্রিয় অভিনেতা ওয়াসিমও মারা গেছেন এ বছর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৪ বছর। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন এ অভিনেতা। এতে বেশ অনেকদিন বাসায় শয্যাশয়ীও ছিলেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

অভিনেতা এস এম মহসীন
অভিনেতা এস এম মহসীন

এস এম মহসীন

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা এস এম মহসীন। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমার শুটিং শেষ করে ২ এপ্রিল ঢাকায় ফিরেছিলেন এস এম মহসীন। এরপরই তার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসে। 

ফকির আলমগীর
ফকির আলমগীর

ফকির আলমগীর 

এবছর বাংলার সংগীতাঙ্গন হারিয়েছে ফকির আলমগীরের মতো গণসংগীত শিল্পীকে। ২৩ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শব্দ সৈনিক। এর আগে ১৪ জুলাই তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসলে ১৫ জুলাই তাকে রাজধানির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৮ জুলাই ভেন্টিলেশনে নেয়া হয় এই শিল্পীকে। ২৩ জুলাই রাতে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায়ই স্ট্রোক করেন তিনি। এরপর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ফকির আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন ।

মাহমুদ সাজ্জাদ
মাহমুদ সাজ্জাদ

মাহমুদ সাজ্জাদ

চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদ। এরপর তিনি করোনা মুক্ত হলেও শুরু হয় করোনা পরবর্তী শারিরিক জটিলতা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ২৪ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

ড. ইনামুল হক
ড. ইনামুল হক

ড. ইনামুল হক

ড. ইনামুল হক ছিলেন একাদারে অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও অধ্যাপক। এ বছর ৭৮ বছর বয়সি এই গুনিজনকেও হারিয়েছে দেশ। ১১ অক্টোবর নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন ড. ইনামুল হক।

হাঙ্গামা২৪.কম
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url