নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট

নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট
নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট

নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট


এ ঘটনাটি ২০১০ সালের। ফিলিপাইনের জামবোয়াগনা শহরের বেশ কিছু কবরস্থান থেকে চুরি হতে থাকে একের পর এক লাশ। অবাক করা ব্যপার হলো লাশগুলোর প্রত্যেকটাই তরুণীদের। এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসে ফিলিপাইনের প্রশাসন। এক রাতে তারা তখ্য পায় জামবোয়াগনা শহরের দক্ষিণের একটি সমাধিস্থলে থেকে একদল মানুষ কবর খুড়ছে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছতে পুলিশের কিছু সময় লেগে যায়। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পায়, বেশ কিছু কবর খুড়ে ফেলা হয়েছে। সেগুলোর কোনোটাতেই লাশ নেই। অর্থ্যাৎ লাশগুলো চুরি হয়ে গেছে। সেই লাশগুলোর প্রত্যেকটিই ছিলো সদ্য মৃত তরুণিদের। সেই রাতেই পুলিশের একটি বিশেষ দল চুরি যাওয়া লাশ উদ্ধার করতে অভিযানে নামে।

অনেক খোজাখুজির পর শেষ রাতের দিকে ঐ কবরস্থানের পাশের একটি জঙ্গলে তারা দেখতে পায়, সেখানে বেশ কিছু খুঁটির সাথে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় মৃতদেহগুলো ঝুলানো রয়েছে। সেখান থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে আনে তারা। পরে ফরেনসিক রিপোর্টে দেখা যায়, মৃতদেহগুলোর সাথে যৌনকর্ম করা হয়েছে। একেকটা দেহে প্রায় দু-তিন জনের সিমেন পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, এতে দু-একজন নয়, অনেক বড় একটা নেক্রোফিলিয়ার দল জড়িত রয়েছে। 

পরবর্তীতে এই ঘটনার দায়ে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করে ফিলিপাইনের পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই অন্যায় স্বীকারও করে। আটককৃত নেক্রোফিলিয়াদের বেশিরভাগই ছিল মাদকাসক্ত এবং তাদের মস্তিষ্ক ছিলো বিকারগ্রস্ত।

নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট
নেক্রোফিলিয়া : মৃতদেহই যাদের টার্গেট

২০২০ সাল অর্থাৎ গত বছরের কথা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা থেকে গ্রেফতার করা হয় কামরুজ্জামান সরকার নামের একজনকে। তিন সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ছিল তার পরিবার। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী সংসারে একেবারেই মনযোগী ছিলেন না কামরুজ্জামান। ঘরে সুন্দরী স্ত্রী থাকলেও তার প্রতি কোন আগ্রহ পেতেন না তিনি। 

কামরুজ্জামান নিজে ছিলেন একজন ভয়ংকর নেক্রোফিলিয়া। তার নিশানা ছিল বিবাহিত নারীরা। যদিও তিনি সমাধিস্থ লাশের প্রতি আগ্রহ পেতেন না। তার নেশা ছিলো জীবন্ত নারীকে হত্যা করে তার সাথে মিলন করা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ২০১৩ সাল থেকে মোট ১১ জন নারীর উপর হামলা চালিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৭ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাকী চারজন কোনোরকমে বেঁচে গেছেন। ঐ এলাকায় মধ্যরাতে সুযোগবুঝে একের পর এক নারীর উপর হামলা চালিয়ে হত্যা করতেন কামরুজ্জামান। এমন ধারাবাহিক হত্যার ঘটনায় পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল সে।
 
বিবাহিত নারীদের খুন করেই ক্ষান্ত হত না কামরুজ্জামান। এসব নারীদের খুন করে তাদের সঙ্গে সঙ্গমও করত এই ভয়ংকর নেক্রোফিলিয়া। হত্যা এবং যৌনাচারের পর সিরিয়াল কিলারদের মতো তিনিও একটি সংকেত বা চিহ্ন রাখতেন। প্রত্যেকটি হত্যার পর তাদের শরীরের গয়না খুলে নিয়ে আসতেন কামরুজ্জামান।

পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার ঘর থেকে উদ্ধার হয় অনেক ইমিটেশন গয়না। এতে বোঝা যায় তার দামী গয়ণার প্রতি অতটাও লোভ ছিলনা। শুধু প্রমাণ হিসেবে ভিকটিমদের গয়না রেখে দেয়াটাও ছিল তার নেশা। 

উল্লেখ্য, ‘নেক্রোফিলিয়া’ এক ধরণের মানসিক যৌন ব্যাধি। যারা এই ব্যাধিতে আক্রান্ত অর্থাৎ যারা মৃতদেহের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে তাদের বলা হয় নেক্রাফাইল।

হাঙ্গামা ২৪
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url