Pori Moni : অশ্লীল ভিডিওর কারণে পরীমনিকে লিগ্যাল নোটিশ

পরীমনিকে লিগ্যাল নোটিশ
পরীমনিকে লিগ্যাল নোটিশ


অশ্লীল ভিডিওর কারণে পরীমনিকে লিগ্যাল নোটিশ


ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণি। বছর জুড়েই ছিলেন আলোচনায়। বোর্ডক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হওয়া থেকে শুরু করে তার জন্মদিন উদযাপন পর্যন্ত সবকিছুই ছিলো বিতর্কের শীর্ষে। 

ফের সমালোচিত হলেন পরীমনি। কারণ, অশ্লীল ছবি ও ভিডিওর কারণে তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে সামাজিক মাধ্যম থেকে তার সব অশ্লীল ছবি ও ভিডিও অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর (সোমবার) আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এবং আইনজীবী ইসমাতুল্লাহ লাকী তালুকদার পরীমণিকে এ নোটিশ পাঠান।

আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুশিয়ারী দিয়ে পরীমনিকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, “গত ১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তির পর কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পরীমণির হাতের তালুতে মেহেদি দিয়ে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিত হওয়ার দিন তার হাতের তালুতে লেখা ছিলো ‘ফাক মি মোর’। যা তিনি সবার সামনে তুলে ধরেন। এর ঠিক একদিন পরেই পরীমণি তার ফেসবুকে ‘হাতে জ্বলন্ত সিগারেট ধরা’ ছবি পোস্ট করেন। সেখানেও তার হাতে লেখা ছিলো অশ্লীল বাক্য। তখন তার পরনে ছিলো কালারফুল প্রিন্টের টপস, খোলা চুলে চোখে চশমা, পায়ে লাল-কালো রংয়ের কেডস। প্রায় অর্ধনগ্ন ছবি পোস্ট করেন তিনি।

পরীমণি তার হাতের তালুতে আঁকা ‘মধ্যমা আঙুল’ উচু করা যে সংকেতটা দেখিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত অসম্মানজনক। কারণ ‘মধ্যমা আঙুল’ তোলা সংকেত অশ্লীল ইঙ্গিত দিতে ব্যবহার করা হয়। পরীমণির মতো একজন অভিনেত্রীর কাছ থেকে অশ্লীলতা প্রকাশে এসব প্রদর্শন কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এছাড়া পরীমণি গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার অভিজাত হোটেল রেডিসন ব্লুতে ৩০তম বার্থডে পার্টির আয়োজন করেন। সেখানে তার পরনে ছিল লাল রঙের শার্ট, যেটি পেট বরাবর বাঁধা। সঙ্গে পরেছিলেন সাদা ধুতির মতো এক ধরনের পোশাক, সেটি আবার লুঙ্গির মতো করে কাছা দেওয়া। অর্থাৎ উরু থেকে পায়ের গোঁড়ালি পর্যন্ত পুরোটাই উদোম। সেই সঙ্গে ছিল পরীমণির অশ্লীল অঙ্গভঙ্গীর নাচ।

শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণি একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিধায় অনেকেই তার আচার আচরণ, অঙ্গভঙ্গি, নাচ, পোশাক, চলাফেরা অনুকরণ ও অনুসরণ করে থাকে। ফলে তার অশ্লীল বাক্য, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য, পোশাক এবং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা এই আচরণ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। শিশু-কিশোরদের গণ্ডি অনেক ছোট থাকে। টেলিভিশন, কম্পিউটার ও মোবাইলে এসব আলোচিত ঘটনার ছবি বারবার তারা দেখছে। এর ফলে বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। কারণ হাতে মেহেদি দিয়ে লেখা ‘ফাক মি মোর’ ও ‘মিডল ফিঙার’ এর ছবি দ্বারা কি বোঝাচ্ছে তা তাদের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

পর্নোগ্রাফি আইন-২০১২ সালের ২ এর ‘গ’ উপধারায় ‘যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য যা চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণ করা ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই তাকে পর্নোগ্রাফি বলা হয়েছে। এই ধরনের অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে একই আইনের ৮ ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি প্রদর্শনের মাধ্যমে গণউপদ্রব সৃষ্টি করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। পর্নোগ্রাফি আইনের অপরাধগুলো আমলযোগ্য এবং অ-জামিনযোগ্য অর্থাৎ জামিনযোগ্য নয়।’

সে মতে শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণি পর্নোগ্রাফি আইনে গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারন করা ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই সংজ্ঞামতে অপরাধ করেছেন। পরীমণির কাছ থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের একজন শিল্পী হিসাবে সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ সবাই প্রত্যাশা করে। তাই নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত পরীমীণকে সব ধরনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যথায় শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণির বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

হাঙ্গামা২৪.কম
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url