Apu Vai : ফেঁসে যাচ্ছেন ‘অপু ভাই’, অভিযোগপত্র আদালতে
টিকটক অপু ওরফে অপু ভাই |
ফেঁসে যাচ্ছেন ‘অপু ভাই’, অভিযোগপত্র আদালতে
উশৃঙ্খল চলাফেরা আর ব্যতিক্রম হেয়ার স্টাইলের কারণে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আলোচনায় আসেন ইয়াসিন আরাফাত অপু ওরফে টিকটক অপু ওরফে অপু ভাই। সামাজিক মাধ্যমে তার বেশ কিছু উদ্ভট ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো সেসময়। যা এক শ্রেনির মানুষের বিনোদনের খোরাক হয়ে উঠেছিলো। আর তখনি এমন সস্তা জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে যান এই অপু ভাই।
প্রায়শ বিভিন্ন টিকটকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যায় যে, তারা রাস্তা বন্ধ করে সাধারন মানুষের সমস্যার সৃষ্টি করে টিকটক ভিডিও নির্মাণ করেন। এমন অভিযোগ এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গিয়েছিলো টিকটকার অপুর বিরুদ্ধেও। অপুর এমন ঘটনা প্রকট আকার ধারন করে গত বছরের আগস্ট মাসের ২ তারিখ। ঐ দিনের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগও ওঠে। ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান রবিনের বাবা সে অভিযোগে মামলাও করেছিলেন।
সড়কে সাধারণ মানুষকে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে অপু সহ আরো ছয় জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সেই মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। বুধবার (৩ নভেম্বর) আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
এই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি টিকটক অপুসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিলো। অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আজিজুর তালুকদার। অভিযোগপত্রে অপু বাদে অন্য আসামিরা হলেন– মো. শাকিল হোসেন (২৬), মো. শাহাদত হোসেন (৩০), মো. সানি (২২), মো. নাজমুল (২১) এবং মো. রনি প্রকাশ ওরফে সৈয়দ রাকিবুর রহমান (২৫)।
যদিও মামলার কপিতে আরো তিন আসামীর নাম পাওয়া যায়। তবে পরবর্তীতে ঐ তিন আসামির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ১১ অক্টোবর মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঐ তিন জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় আদালত। তারা হলেন– মুন্না ওরফে লুৎফর রহমান (২২), জমির উদ্দিন (৪৫) ও মো. সুমন শেখ ওরফে পাপন (২৭)।
টিকটক অপু ওরফে অপু ভাই |
মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনার ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান রবিনের বাবা মামলার বাদী এস এম মাহবুব আলম মারফত জানা যায়, তার ছেলে মেহেদী হাসান রবিনের শ্বশুর বাড়ি উত্তরায়। গত বছরের ২ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্বশুরবাড়িথে ফিরছিলেন রবিন। উত্তরা পূর্ব থানার ৬ নম্বর সেক্টর ধরে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন রবিনসহ তার বন্ধুরা। আলাউল অ্যাভিনিউয়ের ৫২ নম্বর বাসার সামনের পাকা রাস্তায় আসলে তারা দেখতে পান অপু বাহিনী রাস্তা বন্ধ করে টিকটকের ভিডিও ধারণ করছে।
এ সময় প্রাইভেটকারে বসে থাকা রবিন ও তার বন্ধুরা হর্ন বাজালে আসামি সাকিল, শাহাদত, সানি, অপু, নাজমুল, রনি, মুন্না ও জমির উদ্দিন ক্ষেপে গিয়ে রবিন ও তার বন্ধু আফসানুল কবির, সরকার সজল মাহমুদ ও মুরাদুল হককে প্রাইভেটকার থেকে টেনে হিচড়ে রাস্তায় বের করে আনে। এরপর তাদের সাথে থাকা ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও ইট দিয়ে রবিন ওতার বন্ধুদের মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ কারণে তারা জখমসহ রক্তাক্ত হন। একইসাথে ভুক্তভোগীদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ ২১ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যায় অপু বাহিনী। এছাড়া তাদের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন রবিনের বাবা।
এ মামলায় ঘটনার পরদিন (০৩ আগস্ট) উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের আলাউল এভিনিউ-এর ১২ নম্বর বাড়ির পাশ থেকে অপু ও তার সহযোগী নাজমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরে জামিনে মুক্তি পায় এই বিতর্কিত টিকটকার।
উল্লেখ্য, এই ‘অপু ভাই’র গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে। রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার একটি বাসায় থাকতো সে।
হাঙ্গামা২৪
সব খবর সবার আগে জানতে ভিজিট করুন
https://bnbd24.com/