এই শতকের একদম শুরুর দিকে বাংলাদেশের শো-বিজ অঙ্গনে সবথেকে বেশি আলোচিত হয়েছে যে নামটি তা হলো সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি। ক্যারিয়ারের সফলতা যখন হাতের মুঠোয় ঠিক তখুনি ঢাকার বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচে পাওয়া যায় তার লাশ। 

২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বুড়িগঙ্গা নদীর এক নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর কেরানীগঞ্জ অংশের পাশে একটি লাশ পাওয়া যায়। তার পরের দিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন বর্তমান কেরানীগঞ্জ মডের থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। এ মামলায় প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান ওই একই থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কাইয়ুম আলী সরদার। 

এরপর অজ্ঞাত ঐ লাশের ছবি তৎকালীন দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছাপা হলে সুজন নামে নিহতের এক আত্মীয় এসে লাশটি মডেল তিন্নির বলে শনাক্ত করেন। ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর মামলাটির তদন্তভার সিআইডির উপর ন্যস্ত করা হয়। এতে তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন সিআইডির পরিদর্শক ফজলুর রহমান।

পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ, এএসপি আরমান আলী ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তিন্নি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এছাড়াও এই মামলায় জব্দ করা হয়েছে ২২টি আলামত।

 প্রাথমিকভাবে পুলিশি তদন্তে এই মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি অভিযুক্ত হলেও পুলিশ তাকে আটক করতে পারেনি। ২০১০ সালের ১৪ জুলাই অভির অনুপুস্থিতিতেই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নি হত্যা ও মরদেহ গুম সংক্রান্ত মামলায় অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

অবশেষে বহুল আলোচিত ও চর্চিত মডেল-অভিনেত্রী সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছেন আদালত। পূর্বের ঘোষিত তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৫ নভেম্বর রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক কেশব রায় চৌধুরী দিন ধার্য করে রায়ের আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আমিনুল ইসলাম জানান, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনরায় শুনানি করার জন্য একটি আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক পরবর্তী এ তারিখ ধার্য করেছেন।